লুকিয়ে মোবাইল ব্যবহার, মেয়েকে মেরে ফাঁসলেন মা
প্রকাশিত : ১৮:৫৮, ১৫ জুন ২০২০
মোবাইল কিনে দেননি মা, তারপরও লুকিয়ে লুকিয়ে মোবাইল ব্যবহার করে আসছে মেয়ে। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওড়না পেঁচিয়ে মেয়েকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের এ ঘটনায় মা রহিমা বেগমকে (৪৩) আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (১৪ জুন) রাতে উপজেলার বিনোদনগর ইউনিয়নের বড়মাগুড়াগ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রহিমা বেগম ওই গ্রামের বুলু মিয়ার স্ত্রী। মেয়ে ফাতেমা আকতার স্থানীয় বিনোদনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী।
নবাবগঞ্জ থানার ওসি অশোক কুমার চৌহান বলেন, ‘রহিমা বেগম গত শুক্রবার মেয়ে ফাতেমাকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী পাঠানগঞ্জ গ্রামে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখানে গিয়ে ফাতেমা তার এক বান্ধবীর বাসায় থাকার বায়না ধরে। রহিমা বেগম বাধ্য হয়ে ফাতেমাকে রেখে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। পরের দিন ফাতেমাও বাড়িতে ফিরে যায়। রোববার সকালে বাড়ির পাশে গাছ থেকে আম পাড়ার সময় মেয়ে ফাতেমার কোমরে মোবাইল দেখতে পায় তার মা।’
ওসি বলেন, ‘মোবাইলের বিষয়ে জানতে চাইলে তার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি মেয়ে ফাতেমা। পরে তার মা মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে কাঠের একটি আলমিরাতে তালাবদ্ধ করে রেখে প্রতিবেশীর বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় বাড়িতে এসে কাঠের আলমিরার তালাটি ভাঙ্গা এবং মোবাইলটিও খুঁজে পাননি। এসময় মোবাইলটির বিষয়ে জানতে চাইলে আবারও কোন সদুত্তর দিতে পারেনি ফাতেমা। এতে রহিমা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে ফাতেমাকে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে ফাতেমার গলার ওড়না দিয়ে ফাঁস দেন তিনি। এতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ফাতেমা। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবেশীরা রহিমা বেগমকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে গতকাল রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার এবং রহিমা বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।’
ওসি অশোক কুমার চৌহান আরও জানান, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজের মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন রহিমা বেগম। এ ঘটনায় রাতেই মেয়ের চাচা আলম হোসেন বাদি হয়ে রহিমা বেগমকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে রহিমা বেগমকে দিনাজপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
এদিকে, কিভাবে মেয়েটির কাছে ফোন আসলো বা কে মেয়েটিকে ওই মোবাইল ফোনটি দিয়েছে, সে বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলেও জানান ওসি।
এআই/এনএস/
আরও পড়ুন