সিরাজগঞ্জে দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি মামলায় আসামি ২৭০
প্রকাশিত : ২০:২৪, ১৭ জুন ২০২০
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনার ১২ দিন পর আজ পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। এতে সাবেক মন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, তার ছেলে দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর লাজুক বিশ্বাস এবং বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আরমান হোসেনসহ জ্ঞাত-অজ্ঞাত মিলে প্রায় ২৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বেলকুচি থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বুধবার মামলা দুটি দায়ের করা হয়। তদন্ত চলছে, আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিলম্বে মামলা দায়ের প্রসঙ্গে ওসি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক সরকার বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় সাবেক মন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, তার ছেলে দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর লাজুক বিশ্বাস, ভাতিজা নান্নু বিশ্বাস ও পৌর কাউন্সিলর যুবদল নেতা আলম প্রমাণিকসহ ৬৬ জনের নাম উল্লেখ এবং ১২০ থেকে ১৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
অপরদিকে, দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর লাজুক বিশ্বাস বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আরমান হোসেন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াদ আহম্মেদসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ এবং ৫০ থেকে ৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জোকনালা গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী শিক্ষিকা উম্মে জহুরার একটি পরিত্যাক্ত পুকুর নিয়ে প্রতিবেশী রফিকুল ইসলামের দ্বন্দ্ব চলছে। বিষয়টি নিয়ে গত ৬ জুন বিকেলে জোকনালা বাজারে শালিস ডাকা হয়। নির্ধারিত সময়ের ঘন্টা খানেক আগেই রফিকুল ইসলামের পক্ষে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন সেখানে হাজির হন। শালিস শুরু হতে বিলম্ব হওয়ায় তারা প্রায় অর্ধশত মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পথে সগুনা চৌরাস্তা মোড়ে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে শিক্ষিকার পক্ষে তার নিকট আত্মীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান লাজুক বিশ্বাসের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল ও ট্রাকযোগে শালিসে আসার পথে ২ শতাধিক লোকজন সেখানে মুখোমুখি হয়।
এসময় উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে লাজুক বিশ্বাসের পক্ষের উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদ গুলিবিদ্ধ হন এবং তার পেটে ক্ষুর দিয়ে জখম করা হয়। পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন আহত হন। অপরপক্ষে, যুবলীগ নেতা রেজা গ্রুপের কর্মী নাজমুলসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এসময় উভয়পক্ষের অন্তত ৪০টি মোটরসাইকেল, একটি মাইক্রোবাস ও ট্রাক ভাংচুর করা হয়। পরে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এনএস/
আরও পড়ুন