ঢাকা, রবিবার   ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

বেলকুচিতে যুব-ছাত্রলীগের ৫ নেতা-কর্মীকে কুপিয়ে যখম

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৮:৩১, ২৬ জুন ২০২০

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে অভ্যন্তরীন কোন্দলকে কেন্দ্র করে দিনে দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে যুবলীগ-ছাত্রলীগের ৫ নেতা-কর্মীকে কুপিয়েছে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা। তাদের সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলো পৌর যুবলীগ নেতা শেরনগরের সাহেদুল ইসলাম (৩০), যুবলীগ কর্মী শাহাদত হোসেন (২৩), জাহিদুল ইসলাম (২২), ছাত্রলীগ কর্মী আমিরুল ইসলাম (১৮) ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী হাসান (২৬)। এর মধ্যে সাহেদুল ইসলাম সহ ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক। আহতরা সবাই সাবেক মন্ত্রী ও সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান লাজুক বিশ্বাসের অনুসারী। 

এদিকে আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে, বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার নির্দেশে তার সহযোগীরা এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের স্বজনেরা জানান, শুক্রবার দুপুরে বেলকুচি পৌর এলাকার শেরনগরের তাঁতের কাপড় ব্যবসায়ী যুবলীগ নেতা সাহেদুল ইসলাম সহ উল্লেখিত দলীয় ৫ নেতা-কর্মী হাই সরকারের মিলের পাশে অবস্থান করছিল। তখন বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার সহযোগী জুয়েল, ফরিদুলের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ তাদের উপর উপর্যপরী হামলা চালায়। তখন তাদের পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জ্ঞানহীন অবস্থায় ফেলে চলে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসার পর সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে থমথমে ও ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিয়ে বেলকুচি পৌর মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাস জানান, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের এমপি আব্দুল মমিন মন্ডলের ছত্রছায়ায় বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার একের পর এক চাঁদাবাজী সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে পুরো উপজেলা বাসী এখন আতংকগ্রস্ত। প্রতিদিনই শত মানুষ তার সন্ত্রাসীদের দ্বারা হয়রানী হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় আমাদের উপর দফায়-দফায় হামলা হয়েছে। সবিশেষ আমাদের দলীয় ৫ নেতা-কর্মীকে হত্যার হুমকী দিয়ে কুপিয়েছে রেজার নির্দেশে সন্ত্রাসীরা। দলীয় ও আইনগত ভাবে তাদের কঠোর শান্তি দাবী করছি।

তবে বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে জানান, যে কোন সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটলে বিশ্বাস পরিবার আমাকেই দায়ী করে। আমাদের এমপি মমিন মন্ডল বলেছে, কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সাথে যেন আমরা জড়িত না হই। তার নির্দেশ মেনেই চলছি। আমি হামলার ঘটনার সাথে জড়িত নই।

 

এদিকে হামলার ঘটনার ব্যাপারে বেলকুচি থানার সদ্য যোগদান করা ওসি বাহাউদ্দিন ফারুকী জানান, ঘটনটি মর্মান্তিক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ক্ষতিয়ে দেখছি। দায়ীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।  

উল্লেখ্য, গত ৬ জুন বেলকুচি উপজেলার সগুনা চৌরাস্তা মোড়ে একটি সালীশ বৈঠককে কেন্দ্র করে দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আশিকুর রহমান লাজুক বিশ্বাস ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। লাজুক বিশ্বাসের পক্ষের উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক কামাল আহমেদ গুলিবিদ্ধ সহ ১৫ জনের মত আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে ভাংচুর করা হয় উভয় পক্ষের বেশ কিছু মোটরসাইকেল। 
এরপর থেকেই মাঝে-মাঝেই উভয় গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি