নিন্মমানের কাঁচামাল ব্যবহারের অভিযোগে সেতুর কাজ বন্ধের নির্দেশ
প্রকাশিত : ২০:৩৯, ৪ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ২০:৪৭, ৪ জুলাই ২০২০
শেরপুরে দুটি সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করতে গিয়ে নিন্মমানের কাঁচামাল ব্যবহারের অভিযোগে নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন শেরপুর সদর-১ আসনের এমপি ও সরকার দলীয় হুইপ আতিউর রহমান আতিক।
শনিবার (৪ জুলাই) দুপুরে শেরপুর-জামালপুর সড়কের শিমুলতলী ও পোড়াদাহ সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করতে গিয়ে সেতুতে নিন্মমানের পাথর ব্যবহারের সত্যতা পেলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দেন।
এ সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেড কর্তৃক দু’টি সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনী শেষে বালু মিশ্রিত নিন্মমানের পাথর এবং নিন্মমানের লাল বালু দিয়ে সেতুর কাজ এবং পাইলিং কাজে পূর্বের ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আতিউর রহমান আতিক এমপি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সেই সাথে তিনি ১টি সেতুর কাজ বন্ধ রাখার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদকে নির্দেশনা দেন এবং কাজের গুণগত মানোন্নয়নের সঠিক তদারকির জন্য নির্দেশনা দেন।
শেরপুর সদর উপজেলার নন্দীর বাজার এলাকার শীমুলতলী ও পোড়ার দোকান এলাকার সড়কে শত বছর ধরে বন্যা ও বর্ষা মৌসুমে দু’টি কজওয়ে দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হলে যানবাহন এবং মানুষ চলাচল ও উত্তর বঙ্গের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তাছাড়া প্রতি বন্যায় অনেক লোকের প্রাণহানিও ঘটেছে। শেরপুর বাসীর এমন দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে এ থেকে উত্তরণে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে হুইপ আতিক ওই সড়কের দু’টি সেতু এবং সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নেন।
এতে শিমুলতলী সেতুর দৈর্ঘ্য ১২৫.৪৯৭ মিটার, ৪টি স্পেন এবং প্রাকল্লিত ব্যয় ১৮ কোটি ৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। আর পোড়াদাহ সেতুর একই দৈর্ঘ্য ৪টি স্পেন এবং প্রাকল্লিত ব্যয় ২০ কোটি ৯ লাখ ২৩ হাজার টাকাসহ প্রায় ৩৯ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। এ দু’টি সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শেষে হলে বর্ষা ও বন্যা মৌসুমে উত্তরবঙ্গের সাথে সড়ক যোগাযোগ এবং যানবাহন চলাচলে কোন বিঘ্ন ঘটবে না।
এছাড়াও সেতু ও সংযোগ সড়ক পরিদর্শনকালে এলাকাবাসী ও গণমাধ্যমকর্মীরা হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক এমপির কাছে অভিযোগ করেন, সেতু দু’টির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেড নিন্মমানের পাথর এবং নিন্মমানের বালুসহ অন্যান্য নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ বাস্তবায়ন করছেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এসব অনিয়মের সাথে শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আজাহারুল ইসলাম আজাদ জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও তিনি অসৎ উপায়ে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজাহারুল ইসলাম আজাদ এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি অভিযোগগুলো সত্য নয় এবং ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা পাইয়ে দেয়ার মত কোন কাজ করেননি এবং অভিযোগ গুলো অস্বীকার করেছেন।
এ দিকে শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদ জানান, একটি সেতুর কাজ নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে করার জন্য বন্ধ করা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে। এছাড়াও মানসম্পন্ন নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদ, সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারুক আল মাসুদ, শেরপুর জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো.নজরুল ইসলাম, চরপক্ষীমারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ জেলা আওয়ামী লীগ,যুবলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর জামালপুর-শেরপুর-বনগাঁও সড়কের ৭ কি.মি. এ শিমুলতলী সেতু ও একই সড়কের ৯ কি.মি. এ পোড়াদাহ সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে দু’টি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
কেআই/
আরও পড়ুন