ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ভারি বর্ষণে ভাসছে আমনের বীজতলা 

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:১৩, ৬ জুলাই ২০২০

উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ু চাপের তারতম্য আর সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারি বর্ষণে পটুয়াখালীর বাউফলের বিভিন্ন চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর কৃষকের আমনের বীজতলা। 

কেশবপুর গ্রামের কৃষক মোতাহার আকন জানান, ‘গত কয়েকদিন থেকেই ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে নিয়মিত বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাত থেকে ভারি বর্ষণে চন্দ্রদ্বীপের বিভিন্ন চর, অমরখালী, মমিনপুরের চর, চরবাসুদেব পাশাসহ উপজেলার মূল ভূখণ্ডের নিম্নাঞ্চলে ভেসে গেছে কৃষকের আমনের বীজতলা। এসব এলাকার আমনের বীজতলা থেকে দ্রুত পানি নেমে না গেলে ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষক।’

তিনি জানান, ‘এর আগে সরকারি ভর্তুকি মিলিয়ে বিএডিসির নির্ধারিত ডিলার বিভিন্ন খরচের কারসাজি দেখিয়ে কৃষকের কাছ থেকে ২৯০ টাকা ১০ কেজির প্রতি প্যাকেটের আমনের বীজের মূল্য ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা রাখেন। শেষের দিকে এসে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকাতেও বীজধান না পাওয়ায় অনেকেই ভরসা করেছেন নিজস্ব পদ্ধতিতে রাখা বীজের ওপর। জৈষ্ঠের শেষ ও আষাঢ়ের শুরুর দিকে টানা বর্ষণ আর শামুকের কারণে নষ্ট হওয়ায় ইতিমধ্যেই ফের বীজতলা তৈরির উদ্যোগ নেয় অনেকে। এবার ভারি বর্ষণে মাঠঘাট আর বীজতলা ভেসে যাওয়ায় অনেকটা নিশ্চিত ক্ষতির মুখে পড়বে নিম্নাঞ্চলের এসব কৃষক।’

উপজেলার মূল ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপের নিমদীর চরের কৃষক আ. ছালাম মৃধা বলেন, ‘এবার বীজধানের প্যাকেট কিনন লাগজে ৭ থেকে ৮ শো টাকা দিয়া। বিরামহীন বইষ্যা (বর্ষা) থাকলে আর তারাতাড়ি কইর‌্যা পানি না নামলে আমনের বীচলাখলা (বীজতলা) বিনষ্ট হবে।’

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করায় উপকুলীয় পায়রা বন্দর সংলগ্ন এ অঞ্চলে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাতের কথা বলা হয়েছে আবহাওয়া অফিস থেকে। 

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, এ বছর প্রায় ৩৭ হাজার হেক্টরে আমন বীজতলা তৈরিরর লক্ষমাত্রা নির্ধারিত হয়। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৫শ’ হেক্টর স্থানীয় জাতের এবং ১৬ হাজার ৫শ’ হেক্টর উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজতলার জন্য রয়েছে ২২ হেক্টর স্থানীয় এবং ১১শ’ হেক্টরে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজতলা। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সরেজমিন মাঠ পর্যায়ে খোঁজ-খবর নিয়ে কৃষকদের এ সময়ের করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মোবাইলফোনেও আমরা কৃষকদের সাধ্যমতো আবহাওয়ার খবরা-খবর জানিয়ে দিচ্ছি। পানি নেমে গেলে আমন বীজতলার ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। আপদকালীন বীজ বরাদ্দের কথাও রয়েছে। এখনই কৃষকদের ঘাবরে যাওয়ার কিছু দেখছি না।’ 

এআই//এমবি


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি