বাংলাদেশ-ভারত ট্রানজিটের নতুন দিগন্ত খুলে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার
প্রকাশিত : ২৩:৪৪, ২২ জুলাই ২০২০
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ট্রানজিটের নতুন দিগন্ত শুরু হতে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় ডাল ও রড যাওয়ার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতের নিজেদের পণ্য পরিবহন শুরু হতে যাচ্ছে। এদিকে ভারতের রড ও ডাল বোঝাই চারটি ট্রেইলর বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থল বন্দরে পৌছেছে।
দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী ট্রানজিটের প্রথম চালানের এসব পণ্য বুধবার ত্রিপুরা যাওয়ার কথা থাকলেও একদিন পেছানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্যগুলো ভারতের আগরতলায় পাঠানো হবে।
আখাউড়া ও আগরতলা স্থলবন্দরের শূণ্যরেখায় ত্রিপুরা রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এই পন্য গ্রহন করবেন। মূলত মূখ্যমন্ত্রীর জন্যই অনুষ্ঠান একদিন পেছানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভম্যান্ট অব গুডস্ টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া’ চুক্তির আওতায় এবং ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর উভয় দেশের মধ্যে সাক্ষরিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে নিজ দেশে পণ্য পরিবহন করছে ভারত।
পরীক্ষামূলক প্রথম চালান হিসেবে ৫৩.২৫ মেট্টিক টন রড আর ৪৯.৮৩ মেট্টিক টন ডাল নিয়ে গত ১৪ জুলাই কোলকাতার নদীবন্দর থেকে চট্টগ্রামের নদীবন্দরের উদ্দেশ্যে ‘সেজুতি’ নামের একটি ভারতীয় জাহাজ রওয়ানা হয়। ভারতের জাহাজ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মনসুক মান্ধাভিয়া ওই দিন এক ভার্চুয়্যাল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পতাকা নাড়িয়ে জাহাজের যাত্রা উদ্বোধন করেন।
গত মঙ্গলবার দুপুরে ভারতীয় জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে। এরপর আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজ করে কে. জে. শিপিং। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম নদীবন্দর থেকে বুধবার ভোররাতে রড ও ডালবোঝাই চারটি ট্রেইলর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বিকেলে সাড়ে ৪টায় ট্রেইলরগুলো আখাউড়া স্থল বন্দরে পৌছে।
ভারতীয় পণ্য পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত¡াধিকারী মোঃ আক্তার হোসেন বলেন, ‘আজকে (বুধবার) পণ্যগুলো আগরতলায় পাঠানোর জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া ছিলো। কিন্তু একদিন পিছিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্যগুলো আগরতলায় পাঠানো হবে।
আখাউড়া ও আগরতলা স্থলবন্দরের শূণ্যরেখায় ত্রিপুরা রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এই পন্য গ্রহন করবেন।
এদিকে, বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে ভারতের পরীক্ষামূলক এই ট্রানজিটের জন্য ফি নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এর মধ্যে ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি প্রতি চালান ৩০ টাকা, ট্রান্সশিপমেন্ট ফি প্রতি মেট্রিক টন ২০ টাকা, সিকিউরিটি চার্জ প্রতি মেট্টিক টন ১০০ টাকা, অ্যাসকর্ট চার্জ প্রতি মেট্টিক টন ৫০ টাকা, বিবিধ প্রশাসনিক চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ১০০ টাকা, কন্টেইনার স্ক্যানিং ফি প্রতি কন্টেইনার ২৫৪ টাকা। এছাড়া ইলেকট্রিক লক অ্যান্ড সিল ফি হিসেবে বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণ দিতে হবে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের উপ-কমিশনার কাজী ইরাজ ইশতিয়াক বলেন, ‘ভারতীয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। পণ্য পরিবহনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে মাশুল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরেই মাশুল আদায়ের বিষয়গুলো সম্পাদিত হবে।
কেআই/
আরও পড়ুন