ভোলায় মাঝ নদীতে অসংখ্য ডুবোচর, হুমকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ
প্রকাশিত : ১৪:৫৮, ২৯ জুলাই ২০২০
ভোলার মেঘনায় বর্ষা মৌসুমেও মাঝ নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠায় নৌ চলাচলে মারাত্মক বিঘ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। চরের কারণে মাছ শিকার করতে গিয়েও বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ছেন জেলেরা। এছাড়াও একই কারণে নদীর গতিপথ পাল্টে স্রোত বৃদ্ধি পেয়েছে।
এতে একদিকে যেমন নদী ভাঙ্গনের সম্ভবনা রয়েছে, অন্যদিকে বেশ কিছু পয়েন্ট দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে শহর রক্ষা বাঁধ।
এ অবস্থায় ডুবোচরগুলোকে কেটে ড্রেজিং করার দাবি ভুক্তভোগীদের। তবে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ড্রেজিংয়ের একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুম শুরু হলেও ভোলার মেঘনা নদীতে অসংখ্য ডুবোচর জেগে রয়েছে। বিশেষ করে ধনিয়া, কাচিয়া ও ইলিশা নৌ চ্যানেলে রয়েছে অসংখ্য ডুবোচর। এসব চরের কারণে ব্যাহত হচ্ছে নৌযান চলাচল। আর এ কারণেই অনেকক্ষেত্রে জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভর করে চলতে হচ্ছে নৌযান। কখনো আবার মাঝ নদীতেই আটকে যায় লঞ্চ ও ট্রলার। শুধু তাই নয়, মাছ শিকারে গিয়েও বিপাকে পড়ছেন জেলেরা।
হালান মাঝি, জাহাঙ্গীর, সবুজসহ কয়েকজন জেলে জানান, ‘নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে নৌকা চরে আটকে যায়। অনেক সময় আবার জাল আটকে ছিড়ে যায়। কোথায় চর রয়েছে, আর কোথায় নেই, সেটা বুঝা যায় না। বেশিরভাগ স্থানেই একই অবস্থা।’
কাচিয়া ইউপি সদস্য মনির হোসেন বলেন, ‘নদীতে ডুবোচরের কারণে নৌযান চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বাঁধও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। কারণ জাহাজগুলো তীর ঘেষে যাওয়ায় ঢেউয়ে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
কাচিয়া ও ধনিয়া এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ‘শীত মৌসুমে ডুবোচর থাকলেও এখন বর্ষায়ও সেই ডুবোচর। উজান থেকে পানির সাথে আসা পলি জমে সৃষ্টি হয়েছে ডুবোচর। এসব চরের সাথে ঢেউ বারী খেয়ে স্রোত আঘাত হানছে কূলে। এতে ভোলা শহর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় ভাংঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও বেড়েছে নৌপথে ভোগান্তি। বিশেষ করে নদীর গতিপথ পাল্টে যাওয়ায় স্রোত বেড়েছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে নদীর তীর, বসতি ও স্থাপনা।’
এলাকাবাসী আরও জানায়, ‘নদীর ঢেউ চরে বাধাগ্রস্ত হয়ে নদীর গতিপথ পাল্টে গেছে, এতে স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে নদীর কূলে আঁচড়ে পড়ছে স্রোত। আর তাই ঝুঁকিতে বাঁধের বেশ কিছু পয়েন্ট। এমতাবস্থায় ড্রেজিং করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’
উজান থেকে নেমে আসা পলির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। জানতে চাইলে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নান খান এ প্রতিবেদককে জানান, ‘জেলা সদরের অন্তত ১০ কিলোমিটার পয়েন্টে ডুবোচর রয়েছে। পুরো জেলায় ৩৬ কিলোমিটার এলাকায় ডুবোচর ড্রেজিংয়ের একটি প্রকল্প রয়েছে, যা অনুমোদনের অপক্ষোয়। সেটি হলে এ সমস্যা থাকবে না।’
এদিকে, খুব দ্রুত ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার দাবি এলাকাবাসীর।
এআই/এমবি
আরও পড়ুন