ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লাখ টাকার গরুর চামড়া ১শ’ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে না

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৮:১৭, ২ আগস্ট ২০২০ | আপডেট: ১৮:১৮, ২ আগস্ট ২০২০

দাম না পেয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়েছে কোরবানির পশুর চামড়া

দাম না পেয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়েছে কোরবানির পশুর চামড়া

কোরবানির পর পশুর চামড়া নিয়ে ক্রেতা না পেয়ে বিপাকে পড়েছে মিরসরাইর শতশত বিক্রতা। বিক্রি করতে না পেরে অনেকেই মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন কোরবানির গরুর চামড়া। এমনকি ১ লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া ১শ’ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে না।

মিরসরাই পৌরসভার পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা মিজান জানান, ট্রেনারীর দুইজনকে ফোন করেছি কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করে না। একজন ফোন ধরে বলেছে, তারা এবার চামড়া কিনবেনা। এলাকার মওসুমি চামড়া ক্রেতা গরুটির চামড়া একশ’ টাকায় দরদাম করছে। আরেকটু বেশি দামে বিক্রির আশায় ওই ব্যবসায়ীর কাছে চামড়া বিক্রি না করায় পরবর্তীতে আর কোন ক্রেতা পাওয়া যায়নি।

মিরসরাই এলাকায় মিজানের মতো অন্তত ৫০ ভাগ কোরবানিদাতা গরুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে গরু, ছাগল, মহিষসহ অন্যান্য পশুর চামড়া শেষ পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন। অন্যরা ৫০ টাকা থেকে ১শ’ টাকায় বিক্রি করেছেন কোরবানির পশুর চামড়া।

অত্র এলাকার মোস্তফা নামের একজন বলেন, এক সময় ২০ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানি করা গরুর চামড়া বিক্রি হতো প্রায় ১২শ’ টাকা। আর এখন লাখ টাকার উপরে কেনা গরুর চামড়া ১শ’ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে না।

আবার অনেকেই চামড়া বিক্রি করতে না পেরে বিভিন্ন দাতব্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা, এতিমখানা এবং মসজিদে চামড়া দান করেছেন। এই চামড়া নিয়েও রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে বাধ্য হয়েই পানির দামে চামড়া ব্যবসায়ীদের হাতে চামড়া তুলে দিয়েছেন তারা। এক্ষেত্রে পরিবহন ব্যয় এবং শ্রমিকের মজুরির টাকাও উঠবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে এ প্রতিষ্ঠানগুলো।

মিরসরাই দারুল উলুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ শোয়াইব বলেন, এবারের কোরবানীর ঈদে ২৭৯টি গরু, ৪০টি মহিষ এবং ৮টি ছাগলের চামড়া মাদ্রাসায় দান করেছেন এলাকাবাসী। এগুলো নিয়ে আমরা রীতিমতো বিপাকে আছি। স্থানীয়ভাবে ক্রেতা না আসায় পরবর্তীতে শ্রমিক দিয়ে পাশ্ববর্তী বাজারে নিয়ে যাওয়া হয় বিক্রি করতে। শনিবার রাত পর্যন্তও কোন ক্রেতা পাচ্ছিলাম না। পরবর্তীতে বিক্রি হওয়া সাপেক্ষে টাকা দেওয়ার শর্তে একজন ব্যবসায়ীকে চামড়াগুলো দিয়ে রেখেছি। 

তিনি জানান, বাজারে এ সময় প্রতিটি চামড়া ৫০ থেকে ১শ’ টাকায় বিক্রি করছিল মৌসুমী চামড়া সংগ্রহকারীরা।

উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর চামড়ার দাম না পেয়ে লক্ষাধিক চামড়া রাস্তায় ফেলে দেওয়ার ঘটনায় এবার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করেনি।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক নির্বাহী সদস্য শাহ আলম  বলেন, প্রতিবছর আমি ৩ থেকে ৪ হাজার চামড়া ক্রয় করতাম। তবে এ বছর ১ হাজার গরুর চামড়া ক্রয় করেছি প্রতিটি দুইশ’ টাকার মধ্যে। অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী রবিবারও চামড়া নিয়ে আসছেন। চামড়া ক্রয়ে অপরাগতা প্রকাশ করার পরও তারা বলছে টাকা পরে দিলেও চলবে। না হয় চামড়া ফেলে দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোন উপায় থাকবেনা।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি