ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

রসুলপুরে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়, নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৬:১০, ৭ আগস্ট ২০২০

ইট পাথুরের শহরে প্রাকৃতিক নির্যাস এক অনিন্দ্য পরিতৃপ্তি দেয়, আর মনকে করে তুলে প্রস্ফুটিত। সম্প্রতি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য স্থান হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রসুলপুর গ্রাম। নির্মল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর হাওর বিলাসের আমেজ খুঁজতে তিতাস বিধৌত রসুলপুরে ছুটছেন জেলা শহর ও আশাপাশের ভ্রমণ প্রিয়াসী দর্শনার্থীরা। 

সৌন্দর্যের সান্নিধ্যে একটু বিনোদনের জন্য রসুলপুর গ্রামে প্রায় প্রতিদিনই ভিড় করছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ। ইতিমধ্যে এখানকার সৌন্দর্য মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে এক নিজস্ব স্বকীয়তায়। তবে কোন রকম সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করে আনন্দে মেতে উঠেছেন দর্শনার্থীরা ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিনই পড়ন্ত বিকেলের সময় অসংখ্য নারী, পুরুষ ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে রসুলপুর সড়কের দুপাশে ভিড় করছে। সড়কের দুপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া জল রাশির সমরে দাঁড়িয়ে মনকে করেন স্নিগ্ধ। কেউ কেউ প্রিয়জন কিংবা পরিবার পরিজন নিয়ে নৌকা ভ্রমণে ছুটছেন রসুলপুরের রাশি রাশি জলে। উপভোগ করছেন ছোট ছোট ঢেউ আর নির্মল বাতাস এবং অপরূপ প্রকৃতি ও দূর আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘ আর নীল আকাশ। কেউ কেউ পানিতে নেমে সমুদ্র সৈকতের মতো সাঁতার কাটছেন। আবার কখনও উপভোগ করছেন সূর্যাস্তের অপরূপ সৌন্দর্য। এ যেন এক সমুদ্র সৌন্দর্য। বিনোদনকে ঘিরে এলাকায় কয়েকটি রেস্তুরা গড়ে উঠছে।

জেলা শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার পশ্চিমে গোকর্ণঘাট ও নবীরনগর সংযোগ সেতু। গোকর্ণঘাট থেকে কুড়িঘর পর্যন্ত বিলের সৌন্দয্য উপভোগ করা যায়। আর বিলের ভেতরের গ্রামগুলো দেখতে অনেকটা দ্বীপের মত মনে হয়। এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্য্য। এতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মত আমেজ উপভোগ করেন তারা। প্রায় তিন মাস এ আনন্দ উপভোগ করা যায় অনায়াসে। এলাকাকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি করেছেন দর্শনার্থীসহ স্থানীয়রা। 

তারা জানান, রসুলপুরে বর্ষার সময় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক দর্শনার্থী আসে। এজন্য এ রসুলপুর এখন ‘মিনি কক্সবাজার’ নামে পরিচিত অনেকের কাছে। এই সৌন্দর্য্যে বাড়তি মাত্রা হিসেবে যোগ হয়েছে গোকার্ণ ঘাট টু রসুলপুর সেতুটি। এঁকে বেকে যাওয়া দীর্ঘ সেতুটি চলতি বছরে নির্মাণ কাজ শেষ করে চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। মূলত এরপর থেকেই ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড় দিন দিন বাড়ছে। 

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখানে আসছে এবং কোন রকমের স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।

সুধীজনদের মতে, করোনাকালীন এই সময়ে ভ্রমণ পিপাসুদের আরও সচেতন হতে হবে। সরকার সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারে যেই নির্দেশনা দিয়েছে সেটা তারা মেনে চলা জরুরি।

রসুলপুর গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নোয়াব মোল্লা বলেন, ‘বছরের এ সময়ে এখানে মনোরম দৃশ্য অনুভব করতে ভ্রমন পিপাসুদের উপচে পড়া ভিড় জমে। তবে মানুষজনের এ আনন্দ উপভোগ করার মাঝে নিরাপত্তারও ঘাটতি আছে। আমরা এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার জন্য দাবি জানাচ্ছি।’

নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুম বলেন, ‘গোকর্ণঘাট এলাকা দিয়ে জেলা সদর থেকে বেশি মানুষ রসুলপুরে ঘুরতে যায়। স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়টি আমরা শুনেছি। এই বিষয়ে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।’

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, ‘মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, সে জন্য আমাদের পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। রসুলপুরের ওই জায়গায়ও পুলিশের একটি টহল টিম রয়েছে। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে  চেষ্ট অব্যাহত রয়েছে।’

এআই/এমবি/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি