পত্রিকা প্রকাশে ইউনিয়ন ছাড়ার শর্ত দিল আজাদী কর্তৃপক্ষ
প্রকাশিত : ২৩:১৩, ১৩ আগস্ট ২০২০
দেশের প্রাচীনতম দৈনিক আজাদী কর্তৃপক্ষ পত্রিকা প্রকাশে রাজি হয়েছে। তবে তার জন্য একটি শর্তও ছুড়ে দেওয়া হয়েছে পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে। আর তা হলো সাংবাদিকদের ছাড়তে হবে তাদের অধিকার আদায়ের সংগঠন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। কর্তৃপক্ষ দৈনিক আজাদী প্রকাশে সম্মত হলেও কবে থেকে পত্রিকার প্রকাশনা শুরু হবে সেটি নির্ভর করছে অপর দৈনিক পূর্বকোণের সিদ্ধান্তের উপর।
দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, তার পত্রিকার সাংবাদিকরা সিইউজে থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্তটি তাকে ‘লিখিতভাবে’ জানিয়েছেন। তাই সাংবাদিকরা মালিক পক্ষের ‘সঙ্গে থাকায়’ পত্রিকা প্রকাশে তার কোনো সমস্যা নেই। যেহেতু একসাথে সব পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়েছে, সেহেতু দৈনিক পূর্বকোণের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান হলেই পত্রিকা প্রকাশ শুরু হবে। শুক্রবার দুপুরের মধ্যে সমস্যা সমাধান হলে শনিবার থেকে সব পত্রিকার প্রকাশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আজাদী সম্পাদক।
পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাসের দাবিতে গত ২৯ জুলাই দৈনিক আজাদীর মালিক ও সম্পাদক এমএ মালেকের বাসা ঘেরাও করে সমাবেশ করে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)।
বাসার সামনে সমাবেশ করাকে ‘নজিরবিহীন ও অশোভন’ উল্লেখ করে পরদিন থেকে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত পাঁচটি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ রাখে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন ‘নিউজ পেপার অ্যালায়েন্স (সিএনএ)’।
চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজাদী, দৈনিক পূর্বকোণ, দৈনিক পূর্বদেশ, সুপ্রভাত বাংলাদেশ, বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ পত্রিকাগুলো ঈদের ছুটির আগে দুই দিন প্রকাশিত হয়নি। ঈদের ছুটি শেষে গত ৪ অগাস্ট বিভিন্ন পত্রিকা প্রকাশ হলেও চট্টগ্রামের কোনো আঞ্চলিক পত্রিকার কার্যালয় খুলেনি এবং প্রিন্ট ভার্সনের পাশাপাশি অনলাইন সংস্করণও বন্ধ রেখেছে।
ঈদের ছুটির আগে দুইদিনসহ মোট ১১ দিন চট্টগ্রাম থেকে পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ আছে।
গত মার্চ মাস থেকে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পত্রিকাগুলোরও বিক্রি কমে আসে ৯০ শতাংশের কাছাকাছি। এই অবস্থায় দেশের গণমাধ্যমগুলোতে বিজ্ঞাপনের পরিমাণও কমে গেছে।
লোকসানের ধাক্কা সামাল দিতে প্রিন্ট সংস্করণ বন্ধ রাখে কয়েকটি জাতীয় পত্রিকা। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়া দুই ঈদের ৫০ শতাংশ বোনাস কাটাসহ সাংবাদিকদের বেতন কমানোরও সিদ্ধান্ত নেয়।
২৯ জুলাই আজাদী মালিকের বাসা ঘেরাওয়ের পর ৩০ জুলাই সকালে দৈনিক পূর্বকোণ ও বিকালে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার মালিক-সম্পাদকের বাসা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ছিল চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের। কিন্তু পূর্ব ঘোষণা ছাড়া পত্রিকা প্রকাশনা বন্ধ করে দেওয়ায় সিইউজে’র পক্ষ থেকে অন্য কর্মসূচিগুলো স্থগিত করা হয়।
ঈদের ছুটির পর চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন পত্রিকা প্রকাশের দাবিতে সমাবেশ আয়োজন করে। তাতেও কোন ভ্রুক্ষেপ না করে প্রকাশনা বন্ধ রেখেছে চট্টগ্রামের পত্রিকা মালিকরা।
বৈঠকে উপস্থিত এক সাংবাদিক সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আজাদীতে কর্মরত সাংবাদিকরা বৈঠক করে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন থেকে সদস্য পদ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে সিদ্ধান্ত মালিকপক্ষকে লিখিতভাবেও জানানো হয়েছে।
তিনি জানান, বৈঠকে ৩৩ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ৩১ জন সদস্য সাংবাদিক ইউনিয়ন থেকে তাদের সদস্যপদ প্রত্যাহারের পক্ষে সায় দিয়েছেন।
আরকে//
আরও পড়ুন