স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই বেনাপোল-যশোর মহাসড়কে
প্রকাশিত : ১৫:২৮, ১৬ আগস্ট ২০২০
বেনাপোল-যশোর মহাসড়কে শতভাগ যাত্রী উঠিয়ে অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ ভাড়া আদায়ের মধ্যদিয়েই চলাচল করছে গণপরিবহন। করোনা মহামারির বিস্তার ঠেকানোর লক্ষে বাসে ও তিন চাকায় অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলেও চালকরা আগের মতোই যাত্রী বহন করছেন।
চালক ও যাত্রীরা শারীরিক দূরত্বের বিষয়টি মোটেও তোয়াক্কা করছেন না। এমনকি মাস্কের ব্যবহারও উঠে গেছে। করোনা সংক্রমণ এড়াতে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্বের কোনোটিরই তোয়াক্কা করছে না চলাচলকারী এসব গণপরিবহন।
যশোর-সাতক্ষীরা ও যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের নাভারন মোড়ে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, পাশাপাশি দুই সিটে একজন বসার নিয়ম থাকলেও সব বাসেই পাশাপাশি সিটে বসছেন দুইজন। এমনকি বাসের ভিতর গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছেন যাত্রীরা। বাসে জীবাণুনাশক স্প্রে করার নেই কোন ব্যবস্থা। যাত্রীদের দু-পাঁচ জনের মুখে মাস্ক থাকলেও চালক, তার সহকারী কিংবা সুপারভাইজারের (কন্ডাক্টর) কারো মুখে নেই কোন মাস্ক।
এসব নিয়ে বাস চালক ও যাত্রীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগেরও শেষ নেই। যশোরের উদ্দেশ্যে বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা বাসে উঁকি মারতেই দেখা গেলো, বাসে কোনো সিট খালি নেই। চালকের সহকারীকে জিজ্ঞাসা করতেই উত্তর এলো, ‘সিট খালি নেই। ওঠেন সামনে গেলেই সিট পাবেন।’
ওই বাসের কন্ডাক্টর লুৎফর রহমান বলেন, ‘কোরবানি ঈদের পর থেকেই বাসে যাত্রী বেশি হচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত যাত্রী একটু বেশি হয়, তবে বিকেলে কম হয়।’
গণপরিবহনের যাত্রী একজন কলেজ শিক্ষক মাওলানা রফিকুল ইসলাম বাগআঁচড়া থেকে উঠেছেন যশোরগামী বাসে। তিনি বলেন, ‘বাসে স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব ও শারীরিক দুরত্ব কোনটাই মানা হচ্ছে না। তারপরও নেওয়া হচ্ছে ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া। পরিবহনগুলো সরকার নির্দেশিত বর্ধিত ভাড়ার বিষয়টি মানলেও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এ অবস্থা চলতে থাকলে করোনা মহামারি আকারে দেখা দেবে।’
বেনাপোল থেকে যশোরে যাচ্ছেন বড়আঁচড়া গ্রামের আব্দুস সেলিম। তিনি বলেন, ‘করোনার আগে যশোর যেতে ভাড়া লাগত ৫০ টাকা। আজ নিয়েছে ৮০ টাকা। ভাড়া বেশি নিলেও সরকারি বিধিনিষেধ মানার কোন বালাই নেই বাসে।’
বেনাপোল-যশোর সড়কের যশোর থেকে বেনাপোল আসা এক ব্যবসায়ী শওকত হোসেন জানান, ‘যশোর থেকে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া দিয়ে বাসে উঠলেও কিছুদূর আসার পর এক যাত্রীকে তার পাশের সিটে বসায় কন্ডাক্টর। প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হয়নি।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর বাস মালিক সমিতির সহসভাপতি মুসলিম আলি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে প্রশাসনের নানা প্রচারণার পরেও অনেক বাসে সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তারা জানায়, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলে তাদের লোকসান হচ্ছে। তারপরও আমরা বসে নেই। করোনা সংক্রমণরোধের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছি।’
পরিবহনে সামাজিক দূরত্ব মানার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কী-না জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাচলের জন্য সব পরিবহনের সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। যারা মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
এআই/এমবি
আরও পড়ুন