ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় মা-মেয়েকে এক রশিতে বেঁধে নির্যাতন

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৪:১৯, ২৩ আগস্ট ২০২০

কক্সবাজারের চকরিয়ায় গরু চোর সন্দেহে মা-মেয়েকে এক রশিতে বেঁধে নির্যাতনের পর পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম। উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের পহরচাঁদা এলাকায় গত শুক্রবারের ওই ঘটনায় রশিতে বাঁধা অবস্থায় মা-মেয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি প্রকাশ পায়। 

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ বলছে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মা-মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। একইদিন বাদির অভিযোগের প্রেক্ষিতে মা-মেয়েসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।  

চকরিয়া থানার ওসি/তদন্ত মিজানুর রহমান জানান, ‘নারীসহ গরু চোর সিন্ডিকেটের ৫ সদস্যকে এক কিলোমিটার ধাওয়া করে স্থানীয় জনতা আটকের খবরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় ২ নারী ও ৩ পুরুষ সদস্যকে স্থানীয় ইউপি কার্যালয় থেকে আটক করে প্রথমে চকরিয়া হাসপাতাল ও পরে বাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে মা-মেয়েসহ চার জনের বাড়ি পটিয়ার শান্তির হাটে। অপরজনের বাড়ি পেকুয়া উপজেলার লাল ব্রিজ এলাকায়।’

চোর সন্দেহে কোন নারীকে এভাবে নির্যাতন করতে পারে কী-না? জানতে চাইলে ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘এভাবে রশি বেঁধে নির্যাতন করে পাড়া-মহল্লায় ঘুরে বেড়ানোর বিষয়টি প্রথম অবস্থায় আমরা জানতে পারিনি। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত আসামিরাও নির্যাতনের অভিযোগ করেনি। বরং তারা যে গরু চুরি করতে এলাকায় এসেছিল, সেটি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। পুলিশ শুধু বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউপি কার্যালয় থেকে তাদের নিয়ে এসেছে। পরে নির্যাতনের একটি ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি পুলিশ গুরুত্ব সহকারে নেয়।’

ওসির কাছে মামলার তথ্য জানতে চাইলে তিনি থানার বাইরে রয়েছে বলে জানান। এক ঘণ্টা পর বাদীর নাম, মামলা নং ও আসামিদের পরিচয় দেওয়ার কথা বলে ফোন কেটে দেন ওসি। পরে ওই সময়ের পর এ প্রতিবেদক চকরিয়া থানার ওসি/তদন্ত মিজানুর রহমান ও ওসি হাবিবুর রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও ফোন রিসিভ করেননি তারা। 

তবে, এ প্রতিবেদক একাধিক সোর্সের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে, বাদির নাম মাহবুবুল আলম। তার বাড়ি চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের পহরচাদা এলাকায়। মামলানং-২১/চকরিয়া থানা-২২ আগস্ট ২০২০ইং। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, গরু চোর সন্দেহে প্রথমে স্থানীয়রা এক দফা মা-মেয়ের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। পরে হারবাং ইউপি ও গ্রাম পুলিশ মা-মেয়েকে এক রশিতে বেঁধে টেনে হেঁচড়ে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে এসে পুনরায় নির্যাতন করে। 

নানা নির্যাতনের পর ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করে তাদের সোপর্দ করেন। এরপর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। 
এআই/এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি