ঢাকা, রবিবার   ০৩ নভেম্বর ২০২৪

ভারতে আটক ২৫ বাংলাদেশির মুক্তি মিলেছে 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:৩৩, ৩০ আগস্ট ২০২০

সকল জটিলতা কাটিয়ে ভারতে আটক ২৫ বাংলাদেশিকে মুক্তি দিয়েছে দেশটির আদালত। শনিবার (২৯ আগস্ট) দেয়া এ আদেশের ফলে দেশে ফিরতে আর কোন বাধা থাকল না তাদের। আটকরা সবাই কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার বাসিন্দা।  

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর ও বাংলাদেশ-ভারত বর্ডার ভিকটিম রেসকিউ কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, ‘গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গৌহাটিস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার তানভীর মনসুর এবং ধুবড়ি আদালতের আইনজীবী ও আসাম টিউবিনের সম্পাদক রাজর্ষী দাসগুপ্ত তাদের মুক্তির বিষয়টি আমাকে নিশ্চিত করেছেন।’

তিনি জানান, ‘গত ৩ মে দেশে ফেরার সময় ভ্রমণ ভিসা নিয়ে ভারতে যাওয়া ২৬ বাংলাদেশিকে আটক করে ভারতের ধুবড়ি পুলিশ। এর মধ্যে একজন ভারতে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আটককৃতরা বৈধ পাসপোর্ট ও তিন মাস মেয়াদের ভ্রমণ ভিসায় ভারতে গিয়েছিল। করোনার সময় লকডাউনের ফলে তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ধুবড়ি পুলিশ তাদের আটক করে।’

অ্যাড. আব্রাহাম লিংকন জানান, ‘বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ভারত সরকারের প্রসিকিউশন মামলাটি কল অফ করার সম্মতি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে সকল পক্ষের আইনজীবীদের শুনানির পর ধুবড়ি আদালতের বিচারক জেলহাজতে আটক ২৫ বাংলাদেশিকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি এবং মামলাটি নথিভুক্ত করার আদেশ দেন। এর মধ্যদিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাহার হলো। এখন অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া শেষে তারা দ্রুত দেশে ফিরে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময় কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ২৬ বাংলাদেশি ভারতে যান। বৈধ পাসপোর্ট ও ভ্রমণ ভিসা থাকলেও ভারতে দ্বিতীয় ধাপের লকডাউন চলার মধ্যে গত ২ মে ওই ২৬ জন বাংলাদেশি দুটি মিনিবাসে আসামের জোরহাট জেলা থেকে দেশে ফেরার উদ্দেশে রওনা দেন। 

পশ্চিমবঙ্গের চেংরাবান্ধা চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা ছিল তাদের। ভারতে জেলে ও খামারকর্মী হিসেবে কাজ করা এসব বাংলাদেশিকে পরদিন (৩ মে) সকালে বাহালপুর এলাকা থেকে আটক করে আসামের ধুবড়ি জেলা পুলিশ। করোনা পরীক্ষার পর তাদের পাঠানো হয় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে। গত ৫ মে ওই ২৬ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং ফরেনার্স (সংশোধিত) অ্যাক্ট, ২০০৪ এবং পাসপোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৬৭’র ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দেশটির পুলিশ। 

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাসপোর্টধারী এসব বাংলাদেশি টি-ওয়ান ভিসা নিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এই ভিসাধারীদের কাজের অনুমতি না থাকলেও আসাম পুলিশের অভিযোগ, এই বাংলাদেশিরা রাজ্যের জোরহাট, গোলাঘাট ও শিবসাগর এলাকায় কর্মসংস্থান কার্যক্রমে যুক্ত থেকে ভিসার শর্ত ভঙ্গ করেছেন। 

তাদের মুক্তির দাবিতে কুড়িগ্রামে একাধিকবার মানববন্ধন করেন স্বজনরা। এর মধ্যে গত ১ জুলাই কারা হেফাজতে বকুল মিয়া নামে এক বাংলাদেশি মারা গেলে চারদিন পর তার মরদেহ দেশে স্বজনদের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। নতুন করে ২৫ জনের মুক্তির আদেশ দিয়েছে সে দেশের আদালত। এখন প্রিয়জনদের দেশে ফেরার অপেক্ষায় স্বজনরা।
এআই/এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি