লোকসানে রাজশাহীর পানচাষীরা (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৫:৩০, ৩১ আগস্ট ২০২০
করোনা ও বন্যার কারণে দাম কমে যাওয়ায় রাজশাহীতে লোকসানে পড়েছেন পানচাষীরা। করোনার আগে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া পান এখন বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা বিড়া। এ অবস্থায় পান বিক্রি করে খরচই উঠছে না বলে জানান চাষীরা।
জেলার মোহনপুর, দুর্গাপুর ও বাগমারা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পান উৎপাদন হয়। এর মধ্যে মোহনপুরের ধুরইল, খানপুর, মল্লিকপুর, আমরাইল ও মহব্বতপুরে পানচাষী বেশি। এই চারটা গ্রামের প্রায় সবাই পান উৎপাদনের সাথে জড়িত।
পান চাষীরা জানান, নতুনভাবে করতে হলে এক বিঘাতে ১ লাখ টাকা খরচ হবে। বর্তমানে পানের বাজার এতটা কম যে, আমরা পান চাষ করে কোন টাকাই পাচ্ছি না।
রাজশাহীতে বেশ কয়েকটি পানের হাট বসলেও মোহনপুরের একদিলতলা হাট সবচেয়ে বড়। শনি ও বুধবার হাটবার। ভোর থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতার হাকডাকে মুখর হয়ে উঠে হাটটি। চাষীরা জানান, এ বছর উৎপাদন ভালো হলেও পানের দাম খুব কম।
বাজারে আসা এক পানচাষী জানান, বন্যা ও লকডাউনের জন্য সব মোকাম বন্ধ হয়ে আছে। বর্তমানের বাজার দিয়ে কিছুই হবে না, নিজের সংসারও চলবে না। আরেক চাষী জানান যে, বিশ টাকা বিড়া, ৬শ’ টাকা পোয়া বলছে ব্যবসায়ীরা।
মোহনপুরের পান ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। রফতানি হয় কুয়েত, আবুধাবিসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে। তবে করোনার কারণে বিদেশে রফতানি আপাতত বন্ধ রয়েছে।
পান ব্যবসায়ীরা জানান, এখানকার পান নরসিংদীর বেলানগর, ঘোড়াশাল, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় পাঠানো হয়। এখন সর্বোচ্চ দর ১৬শ’ টাকা, আর এই পান চৌত্র মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, রাজশাহীতে ৪ হাজার ৩১১ হেক্টর জমিতে ৬৮ হাজার ৯৭৬ মেট্রিক টন পান উৎপাদন হয়। বছরে প্রায় এগারোশ’ কোটি টাকার পান বেচাকেনা হয়, যা আমের বেচাকেনার চেয়েও বেশি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল হক জানান, রাজশাহী পানের কদর সারাদেশব্যাপী। রাজশাহীর মিষ্টি পান সবার কাছে জনপ্রিয়।
পান চাষের সাথে রাজশাহী জেলার ৬৯ হাজার ২২৮ জন কৃষক জড়িত।
এএইচ/এমবি
আরও পড়ুন