দুই মাস পর সুন্দরবনের নদী ও খালে জেলেরা
প্রকাশিত : ১৬:০২, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০
বনবিভাগের নিষেধাজ্ঞা শেষে মৎস্য আহরণে নেমে পড়েছেন জেলেরা। দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ বুধবার সকাল থেকে উপকূলের জেলেরা মাছ ধরতে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে ট্রলার, নৌকা নিয়ে নেমে পড়েন। প্রজনন মৌসুমকে ঘিরে গত জুলাই ও আগস্ট মাস পর্যন্ত বনের অভ্যন্তরের প্রবেশ ও সকল প্রকার মৎস্য আহরণ বন্ধ রাখা হয়েছিল।
এতে চরম হতাশা আর দূরাবস্থার মধ্যে পড়েছিলেন উপকূলের প্রায় ৩০ হাজার জেলে পরিবার। এদিকে দুমাস বন্ধ থাকার পর পুনরায় মাছ ধরার অনুমতিতে সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল হাজার হাজার জেলে পরিবারে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বেলায়েত হোসেন জানান, ‘প্রজনন মৌসুম থাকায় নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ থেকে জেলেদের সুন্দরবনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন খাল ও নদীতে পুনরায় মাছ শিকারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সীমিত আকারে জেলেদের মাছ ধরার এ ধরনের অনুমতি দেয়া হয়। তবে, জেলেদের ছদ্মবেশে কেউ যাতে বিষ দিয়ে মাছ শিকারসহ বেআইনী কর্মকাণ্ডে জড়িত না হন সে জন্য বন রক্ষীদের টহল ও অন্যান্য কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
বন বিভাগ ও জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৬ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনে ছোট বড় মিলিয়ে ৪৫০টি নদী-খাল রয়েছে। বনাঞ্চলের এ জলাভূমির মধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষিত ৩০টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রসস্থ খালে সারাবছরই মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। আর বাকি অংশের নদী-খাল ও জলাভূমিতে পারমিটধারী জেলেরা মৎস্য আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে।
বনাঞ্চালে মৎস্য আহরণের উপর সুন্দরবন উপকূলের প্রায় ৩০ হাজার জেলে পরিবারের জীবন জীবিকা নির্ভর। এদের বেশির ভাগই বংশ পরম্পরায় সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। মোংলা ও আশপাশের এলাকাসহ সুন্দরবন লাগোয়া এলাকার বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীও বনের মৎস্য সম্পদ আহরণ ও বিকিকিনির সঙ্গে জড়িত।
সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানস এর (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সালে বন বিভাগ প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের সকল নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এ নিষেধাজ্ঞা গত সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই বন বিভাগের অনুমতি ও পাসপারমিট সংগ্রহ করতে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্টেশনসমূহে জেলেদের ভিড় বেড়েছে। অনেকেই আগে থেকে অনুমতি পত্র সংগ্রহ করে গতকাল থেকেই মাছ ধরতে নেমে পড়েন।
এআই/এসএ/
আরও পড়ুন