ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

ছাদের ওপর পল্লী বিদ্যুতের তার এখন মৃত্যুর ফাঁদ!

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৯:৪২, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

চাহিদা মতো ঘুষের টাকা না পাওয়ায় বিদ্যুতের তার টেনে মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত করে রেখেছে পল্লী বিদ্যুত সমিতি। ঘটনাটি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রহিমাবাদ উত্তরপাড়ায়। ওই এলাকার হোসেন শরিফ মনির নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বসতবাড়ির ছাদের ওপর ঘেঁষে পল্লীবিদ্যুতের ৩ স্তর বিশিষ্ট ১১ হাজার ভোল্টের লাইন টেনে নিয়ে যাওয়ায় ভয়াবহ দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানির আশংকা দেখা দিয়েছে।

ইতোমধ্যে দুই তারের সংঘর্ষে আগুন ধরে তার ছিঁড়ে গিয়ে পুরো ছাদ বিদ্যুতায়িত হয়েছিল। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসায় সে যাত্রা বড় ধরনের দুর্ঘটনার থেকে রক্ষা পায় এলাকাবাসী। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ৮ মাস আগে পার্শ্ববর্তী আব্দুল আজিজ এবং কাওসার নামের দুই ব্যক্তির যৌথ মালিকানাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাই করতে গিয়ে উচ্চ ভোল্টের ওই তারের আকর্ষণে বিদ্যুতায়িত হয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন রডমিস্ত্রি হারুনুর রশিদ। ওই দুর্ঘটনায় তার শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এমনকি ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে ফেলতে হয়েছে তাকে।

এমতাবস্থায় অপরিকল্পিতভাবে রাস্তার মাঝে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করায় মানুষের যাতায়াতের চরম ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ায় এবং বসত বাড়ির ছাদ ঘেঁষে উচ্চ ভোল্টের লাইন টানায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

অপরদিকে বাড়ির ছাদ থেকে উচ্চ ভোল্টের ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক লাইন অপসারণের জন্য বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ বরাবর লিখিত আবেদনের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হোসেন শরিফ মনির। 

তিনি জানান, মহল্লার রাস্তার মাঝখানে খুঁটি পুতে এবং বিল্ডিং বাড়ির ছাদের উপর দিয়ে আড়াআড়িভাবে ১১ হাজার ভোল্টের তার টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে পাশের বিল্ডিংয়ে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করতে গিয়ে হারুনুর রশিদ নামের এক রডমিস্ত্রি ওই তারের সাথে সর্ট খেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হন। এ ঘটনার কয়েক দিন পর ওই তারে আগুন ধরে বিকট শব্দে বিষ্ফোরণ ঘটে এবং তার ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায় মহল্লাবাসী। তার ছিঁড়ে পড়ার বিষয়টি জানার পর বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন লাইন মেরামত করতে এসে একেবারে ছাদ ঘেঁষে লাইন টেনে দিয়েছে। অথচ তার ছিঁড়ে পড়ার আগে ছাদ থেকে ৫-৬ ফুট উপর দিয়ে তার টানানো ছিল। 

অবস্থা বেগতিক দেখে গত জুন মাসে ঝুঁকিপূর্ণ তার অপসারণের জন্য বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ বরাবর লিখিত আবেদন করেন হোসেন শরীফ মনির। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ওই আবেদনে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সুপারিশও করেন। তারপরও বিদ্যুৎ অফিস এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বরং তার অপসারণের জন্য আব্দুল আওয়াল নামের একজন জুনিয়র প্রকৌশলী দেড় লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন বলে অভিযোগ তার।

তবে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জুনিয়র প্রকৌশলী আব্দুল আওয়াল এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বৈদ্যুতিক তার অপসারনের আবেদন সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। তবে কারো কাছে কোন টাকা চাওয়া হয়নি।

বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস জানান, কনসাল্টেন্ট পাঠিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে বিষয়টি সমাধান করা হবে।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি