গৃহবধূ আঁখি হত্যার বিচার দাবিতে নড়াইলে মানববন্ধন
প্রকাশিত : ১৪:৪৬, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০
গৃহবধূ আকলিমা খাতুন আঁখি (১৮) হত্যার বিচার দাবিতে নড়াইলের কালিয়ায় পল্লীসমাজের উদ্যোগে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সালামাবাদ ইউনিয়নের জয়পুর এলাকায় এ মানববন্ধন করা হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচির কালিয়া উপজেলার মাঠ সংগঠক লিপি বিশ্বাস, সাবেক ইউপি সদস্য সুকরণ বেগম, খাদিজা বেগম, শাজনাজ পারভীন প্রমুখ। ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচির সহযোগিুতায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তরা বলেন, গৃহবধূ কলেজছাত্রী আকলিমা খাতুন আঁখিকে শরীরে ডিজেল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আঁখির মৃত্যু হয়। এর আগে গত ১৫ আগস্ট বিকেলে অগ্নিদগ্ধ হন আঁখি। ঘটনার দুদিন পর (১৭ আগস্ট) আঁখির দাদা রতন আলী বাদী হয়ে আঁখির সাবেক স্বামী কেড়িনগরের নাজমুল মোল্যাসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনের নামে মহম্মদপুর থানায় মামলা করেন। আমরা আঁখি হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত বিচার চাই।’
আঁখির দাদা রতন আলীসহ পরিবারের সদস্যরা জানান, ‘দুই বছর আগে আঁখির সঙ্গে কেড়িনগরের নাজমুল মোল্যার বিয়ে হয়। তারা একেঅপরকে ভালোবেসে বিয়ে করলেও তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় বিয়ের সাতমাস পর আঁখি নাজমুলকে তালাক দেয়। বিষয়টি নাজমুল মেনে নিতে পারেনি। এরপর নাজমুল আঁখিকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত এবং বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিত।’
তারা জানান, ‘বিষয়টি আঁখি তার পরিবারকে জানায়। এর মধ্যে গত ১৫ আগস্ট বিকেলে আঁখি তাদের বাড়িতে বাথরুমে যাওয়ার সময় ওঁৎপেতে থাকা নাজমুলের লোকজন তাকে (আঁখি) জাপটে ধরে। আঁখির ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে তাকে বেঁধে ফেলে শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে আঁখির শরীরে বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে এবং পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১ সেপ্টেম্বর রাতে তার মৃত্যু হয়।’
এদিকে আঁখি হত্যা মামলার প্রধান আসামি নাজমুলের চাচি রত্নাসহ তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘আঁখিকে আবার বিয়ে করার জন্য ঘটনার তিন থেকে চারদিন আগে নাজমুল গ্রাম্য মাতব্বরদের ডেকে আনেন। আঁখিও নাজমুলকে বিয়ে করতে চাইলেও মেয়ের পরিবার বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। অন্য ছেলের সঙ্গে আঁখিকে জোর করে বিয়ে দেয়ার জন্য তার পরিবার চাপ দেয়ায় নিজে (আঁখি) শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।’
মহম্মদপুর থানার ওসি তারক বিশ্বাস বলেন, ‘এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। মামলায় পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ঘটনা নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা বের করা হবে।’
এআই/এমবি
আরও পড়ুন