ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ঈশ্বরদীতে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২০:১৮, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

সংঘর্ষের চিত্র -ছবি একুশে টেলিভিশন।

সংঘর্ষের চিত্র -ছবি একুশে টেলিভিশন।

পাবনার ঈশ্বরদীতে আসন্ন উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দলীয় কার্যালয়ের মধ্যেই একাধিক নেতা-কর্মীকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাতে কমপক্ষে ১৪ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে ঈশ্বরদীতে আয়োজিত উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনকে অভ্যর্থনা জানানোকে কেন্দ্র করে এসব ঘটনার সূত্রপাত।

ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন- ভারপ্রাপ্ত ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের আবদুস সালাম খানের ছেলে নাজিম উদ্দিন রনি খান, ঈশ্বরদী পৌর যুবলীগের সাবেক সভাপতি সানোয়ার হোসেন লাবু। এছাড়াও সংঘর্ষে আহতরা হলেন- ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা, রিকশা চালক ওলিউর রহমান, যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলামসহ ১২ জন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, পাবনা সদর আসনের এমপি গোলাম ফারুক প্রিন্স, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপিসহ পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের উপস্থিতিতেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ধাক্কা ধাক্কিতে ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টুও সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার আকস্মিকতায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, পাবনা-৪ আসনের আসন্ন উপনির্বাচনকে সামনে রেখে সোমবার ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনকে অভ্যর্থনা জানাতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। অভ্যর্থনায় সামনে থাকাকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথার মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এর রেশ ধরে তাৎক্ষণিকভাবে পৌর আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। 

এক পর্যায়ে অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ার ছুঁড়ে একে অপরের সঙ্গে মারামারিতে লিপ্ত হয় দলীয় নেতা-কর্মীরা। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও তাদের থামাতে ব্যর্থ হন। পরে এই সংঘর্ষ দফায় দফায় অন্য নেতা-কর্মীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়লে দলীয় কার্যালয়ের মধ্যেই ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন যুবলীগ নেতা সানোয়ার হোসেন লাবু ও উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে রনি। তাদের দুজনকে প্রথমে পাবনা ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এদিকে সংঘর্ষের সময় ঈশ্বরদী শহরের স্টেশন রোডে ও বাজার এলাকার দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাস্তায় জড়ো হন উৎসুক জনতা। শহরের মেইন রোডে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হলে বাজারে আসা শত শত মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। আতঙ্কিত মানুষদের ভয়ে এদিক সেদিক ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। 

ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, এ ঘটনা নৌকার নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীক বিজয় লাভ করার মধ্য দিয়ে ষড়যন্ত্রের জবাব দেওয়া হবে। 

ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা বলেন, নির্বাচন বানচালের জন্য পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মিন্টু ইচ্ছাকৃতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ ঘটনা সম্পর্কে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে ঈশ্বরদীর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। অনাকাঙ্খিত এ ঘটনার সঙ্গে ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের যেসব নেতা-কর্মী জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দীন এ ঘটনা সম্পর্কে বলেন, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। শহরে পুলিশ মোতায়েন ও বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোন পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি, তবে শহরের পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি