হারতে নারাজ মামুন
প্রকাশিত : ১৫:৩৫, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
টি শার্ট, পলো শার্ট, জিন্স প্যান্ট হোম ডেলিভারির কাজ করতেন আল মামুন। গাজীপুরের কোনবাড়ি এলাকার আনছার বিল্ডিংয়ে ভাড়ায় থেকে সেখানকার ছোট ছোট কারখানা থেকে এসব তৈরি পোশাক কিনে নিয়ে বিক্রি করতেন ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটেও। বেশ ভালভাবেই চলছিল গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করা স্ত্রী আর দুই সন্তান মাহিমা (৪), কনাসহ (১) চারজনের সংসার।
কিন্তু করোনায় মার্কেটিংয়ের এই কাজ বন্ধ হয়ে গেলে বাধ্য হয়ে ঢাকা ছাড়তে হয় তাকে। তবে ছোটবেলায় পড়াশুনা বন্ধ করে অভাবী সংসার ছেড়ে জীবন সংগ্রামে বের হয়ে আবার ঘরে ফিরেও হারতে নারাজ মামুন। ইউটিউ ঘেটে তুষ-হারিকেন পদ্ধতিতে হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর কাজে হাত দিয়েছেন পটুয়াখালীর বাউফলের ধানদী গ্রামের আ. রহিম চৌকিদারের ছেলে আল মামুন (৩০)। জীবন সংসারে হারার আগেই হারতে নারাজ তিনি।
মামুন জানান, ‘প্রশিক্ষণ না থকলেও জীবনে একটা কিছু করে বাঁচার জন্যই ইউটিউব ঘেটে আল্লাহর ওপর ভরসা আর নিয়মানুবর্তিতাকে পুঁজি করেই এই কাজ শুরু করেছি। আধুনিক প্রযুক্তি আর যন্ত্রপাতির প্রয়োজন না থাকায় খরচ পড়বে কম। ঢাকা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসে তাপ পরিমাপক থার্মোমিটার আনাসহ বাঁশের তৈরি সিলিন্ডার আকৃতির মোড়া, তুষ, খরকুটো আর হারিকেন সংগ্রহ করে কাঠের দোতলা বসতঘরের একটি কক্ষে তৈরি করা হয়েছে হ্যাচারি।’
তিনি জানান, ‘বাবা রহিম চৌকিদারের সহায়তায় স্থানীয় চরাঞ্চলে ছুটে চলছি ডিম সংগ্রহে। সহযোগিতা করছেন মা হনুফা বেগমও। নিয়ম মেনে সাবধানতা অবলম্বন করতে পারলে ২৬-২৮ দিনে পাওয়া যাবে হাঁসের বাচ্চা। আসবে সফলতা।’
মামুন বলেন, ‘বাচ্ছা উৎপাদনে প্রতি শতকে দেড় হাজার টাকার মতো খরচ পড়বে। বিক্রি হতে পারে চার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায়। করোনা মহামারি জীবন সংসারে যে বিপর্যয় এনেছে সেখান থেকে মুক্তি চাই। হারার আগে হারতে চাই না। বাঁচতে চাই।’
উপজেলার কালিশুরী ডিগ্রি কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক তাসলিমা বেগম জানান, ‘হ্যাচারি শিল্পে বড় বড় ইনকিউবেটর ব্যবহার ব্যয়বহুল। করোনাকালে তুষ-হারিকেন পদ্ধতিতে হাঁসের বাচ্চা ফোটানোর মতো দেশিয় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় উপকূলীয় চরাঞ্চলে সাধারণের সাবলম্বি হওয়ার সুযোগ আছে।’
এআই//এমবি
আরও পড়ুন