ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

রাঙ্গুনিয়ার সরকারি জমি জাল দলিলে বেচাকেনা! জানে না বন বিভাগ

চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশিত : ২২:১৪, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০

রাঙ্গুনিয়া বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন

রাঙ্গুনিয়া বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন

রাঙ্গুনিয়া বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের জায়গার জাল দলিল তৈরি করে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে বেদখল করা হয়েছে। এ জাল দলিলের মাধ্যমে সরকারি জমির বেচাকেনাও দেখিয়েছে অবৈধ দখলকারীরা। সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ নিশ্চিন্তপুরে।

১৫ বছর আগে, ২০০৬ সালের ১ জুলাই স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব আলম ও তাঁর ছেলের সঙ্গে বন বিভাগের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরপর সামাজিক বনায়নের আওতায় তিনি সেখানে আম, কাঁঠাল, সুপারি, নারিকেলসহ ফলদ গাছ ছাড়াও গামারি, চাপালিশ বিভিন্ন জাতের গাছ লাগিয়েছেন। ৮ কানি আয়তনের প্রায় ৫০ লাখ টাকা মূল্যের জমি বেদখল হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ (আইজি) সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে।

পাঠানো চিঠিতে জনৈক মোহাম্মদ হাবিব, মোহাম্মদ ফোরকানসহ বেশ কয়েকজন জড়িত বলে নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে চুক্তিকারী মাহবুব আলম বলেন, ‘আমার স্বাক্ষর জাল করে সামাজিক বনায়নের জন্য চুক্তি নেওয়া জায়গা জোরপূর্বক দখলে নিয়ে বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগও দেওয়া হয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, জমি বিক্রি কিংবা হস্তান্তর কোনোটাই করিনি। এমনকি বিক্রির দাবি করা হয়েছে বলে যে দলিলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভাগ সংযোগ দিয়েছে সে সংক্রান্ত কোনো নথি আমাদেরকে সরবরাহ করছে না বিদ্যুৎ বিভাগ।’

এ ব্যাপারে জমি দখলে নেওয়া মোহাম্মদ হাবিব বলেন, ‘দখলস্বত্বে আমিসহ পাঁচজনের কাছে মাহবুব আলম জমি বিক্রির দলিল করেছেন।’ এ ধরনের দলিলের কি ভিত্তি আছে? এমন প্রশ্ন করা হলে জনাব হাবিব তা এড়িয়ে যান।

এদিকে সামাজিক বনায়নের চুক্তি করা সরকারি জমি বিক্রির কোনো বিধান নেই বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের চট্টগ্রামের সংরক্ষক আবদুল আউয়াল সরকার। তিনি বলেন, ‘লভ্যাংশের ভিত্তিতেই এমন চুক্তি করা হয়। কেউ স্থানান্তর করলে কিংবা বেচাকেনা করলে অথবা অন্য কোনো জাল দলিল করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ পেলে বন বিভাগ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।’

একজনের চুক্তি নেওয়া জায়গায় অন্যজন বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। কীভাবে এই অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে সে ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া বিদ্যুৎ অফিসের উচ্চমান সহকারী আবুল কালাম বলেন, ‘স্ট্যাম্পে জমি কেনার দলিল দেওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত দলিল যার নামে তিনি পাবেন সংযোগ। কেউ যদি সঠিক কাজ না করেন তাহলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সদর রেজিস্ট্রি অফিসের সহকারী এরাদুল হক ভুট্টো জানান, সামাজিক বনায়নের জমি বিক্রি কিংবা হস্তান্তর কোনোটাই করা যাবে না। কেউ করলে কিংবা অবৈধ দখলে নিলে তার বিরুদ্ধে বন বিভাগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সামাজিক বনায়নের জায়গার গাছ বিক্রির ৪৫ শতাংশ পাবে ভূমির চুক্তিকারী। ৪৫ শতাংশ বনবিভাগ ও ১০ শতাংশ যাবে ফার্মিং ফান্ডে।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি