বেনাপোল দিয়ে অনিশ্চিত পেঁয়াজ আমদানি
প্রকাশিত : ০৯:০৩, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
ভারত থেকে পেয়াঁজ আমদানিতে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়ায় টানা ১১ দিন ধরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে এ বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় বিভিন্ন বেসরকারি পার্কিং ও বেশকিছু পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক।
এসব পেঁয়াজের বেশির ভাগ পঁচে গলে নষ্ট হয়ে গেছে। দ্রুত এসব ট্রাক ছাড় করাতে না পারলে আবারও নতুন করে ক্ষতির শিকার হবেন এদেশের ব্যবসায়ীরা।
এদিকে বাংলাদেশি আমদানিকারকেরা তাদের ভারতীয় রফতানিকারক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পুরনো এলসির আটকে পড়া পেঁয়াজ ছাড় করণে বার বার আবেদন জানালেও এখন পর্যন্ত কোন সাড়া মেলেনি। ফলে দেশে পেঁয়াজ আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বেনাপোল বন্দরের স্থানীয় বাজারে পেয়াঁজ সংকট দেখা দেয়ায় দাম আবারও বেড়ে চলেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিন পাইকারি বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা আর খুচরা বাজারে তা ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ অর্ধেক নষ্ট হওয়ায় বাজারে দাম বেড়েছে দাবি ব্যবসায়ীদের।
পেয়াজ আমদানিকারক শেখ ট্রেডার্সের শেখ মাহাবুব বলেন, ‘প্রতিবছর পেঁয়াজ নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড হয়। ভারত কখনো উৎপাদন সংকট আবার কখনো রফতানি মূল্য তিনগুণ বাড়িয়ে আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য করে। এক্ষেত্রে সংকট মোকাবিলায় ভারত ছাড়াও বাইরের কিছু দেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানাই সরকারের প্রতি।’
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক আনু বলেন, ‘তারা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পেঁয়াজ রফতানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে এ পথে আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’
পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, ‘বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ওপারের বিভিন্ন পার্কিংয়ে হেফাজতে তাদের বেশ কিছু ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ট্রাকের পেয়াঁজে পচন ধরেছে। নিষেধাজ্ঞার আগেই এসব ট্রাক বন্দর এলাকায় পৌঁছে ছিল। দ্রুত এসব ট্রাক না ছাড়লে আবারও নতুন করে তারা লোকশানে পড়বেন।’
বেনাপোল বন্দরের পাইকারী পেঁয়াজ বিক্রেতা শুকর আলী জানান, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি কম। আর যা আসছে তা অর্ধেক বস্তায় পচা পাওয়া যাচ্ছে। এতে বাজারে দাম কমছে না। বাইরে থেকে আমদানি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত একরম বাজার অস্থিতিশীল থাকবে বলে মনে হচ্ছে।’
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, ‘কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সংকট দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেবর থেকে বাংলদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এ পর্যন্ত কোন পেঁয়াজের ট্রাক দেয়নি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। দিবে কী-না তাও নিশ্চিত জানাতে পারেনি।’
তবে এ পথে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে অন্যান্য পণ্যের আমদানি ও রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেবর থেকে ২৩ সেপ্টেবর পর্যন্ত ১০ দিনে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৫৪৪ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য। তবে এসব পণ্যের মধ্যে কোন পেঁয়াজের ট্রাক ছিল না। একই সময়ে ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি হয়েছে ১ হাজার ২৭ ট্রাক। তবে এসব রফতানি পণ্যের মধ্যে ৬৭ ট্রাক ছিল পদ্মার ইলিশ।
এআই//এমবি
আরও পড়ুন