ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঘরে ফিরছেন সেই মায়া রানী (ভিডিও)

নড়াইল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১২:৪৭, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ | আপডেট: ১৩:০০, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

দেড় বছর আগে সন্তানদের থেকে বিতাড়িত হন ৮৫ বছরের মায়া রানী কুন্ডু। এরপর এ বাড়ি, ও বাড়িতে কেটে যায় অনেক মাস। সবশেষ ১২ দিন আগে চিত্রা নদীর পাড়ে মাথার গোজার ঠাই খোঁজেন তিনি। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পেরে মায়া রানীকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা। 

তার উদ্যোগে শারীরিক উপার্জনে অক্ষম সেই বৃদ্ধা এবার সন্তানদের ঘরে ফিরছেন। 

জানা গেছে, সন্তানদের কাছ থেকে বিতাড়িত হয়ে স্বামীহারা বয়োবৃদ্ধ মায়া রানী নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম এলাকায় চিত্রা নদীর পাড়ে এস এম সুলতান স্মৃতিসংগ্রহশালার পাশে দ্বিতলা নৌকার নিচে আশ্রয় নেন। শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় লোকজন সাংবাদিকদের বিয়টি জানান।

সংবাদকর্মীরা বিষয়টি নড়াইল জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি ওইদিন (শুক্রবার) সন্ধ্যায় মায়া রানীকে হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং তার (মায়া রানী) সন্তানদের সাথে কথা বলেন।

এদিকে শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক মায়া রানীকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো সন্তানই এভাবে তার বাবা-মাকে বাইরে ফেলে রাখতে পারেন না। আমরা সেই বিষয়টি আইনগত ভাবে দেখব। মায়া রানীর মতো আর কোনো ঘটনা যেন না ঘটে, সেদিকে সবার লক্ষ্য রাখতে হবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নড়াইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার মশিউর রহমান বাবু, হাসপাতালের সমাজসেবা কর্মকর্তা তমা রায়সহ অনেকে।  

ডাক্তার মশিউর রহমান বাবু জানান, ‘মায়া রানীর বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়া তেমন কোনো সমস্যা নেই। তাই আগামী দুদিন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হবে।’
অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পর মায়া রানীর বড় ছেলে দেব কুন্ডু (৫০) ও তার স্ত্রী গতকাল হাসপাতালে ছুটে আসেন। এ সময় তারা জেলা প্রশাসককে প্রতিশ্রুতি দেন, মাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেয়ার। মায়ের প্রতি আর কোনো অবহেলা করবেন না বলেও অঙ্গীকার করেন। তবে মায়া রানীর ছোট ছেলে উত্তম কুন্ডুর (৪০) এখনও দেখা মেলেনি। উত্তম নড়াইলের বাইরে থাকেন বলে জানা গেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে দেব কুন্ডু তার মা মায়া রানীকে দেখাশোনা করছিলেন। এরপর প্রায় দুই বছর আগে মায়ের কাছ থেকে পাঁচ শতক বসতি জমি লিখে নেয়ার পর তার (মায়া রানী) সাথে বাজে ব্যবহার শুরু করেন। প্রায় দেড় বছর আগে থেকে মায়ের ভরণপোষণ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বড় ছেলে ও তার স্ত্রী মায়া রানী কুন্ডুকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। 

বৃদ্ধা মায়া রানী আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশিসহ এ-বাড়ি ও-বাড়িতে দুবেলা, দুমুঠো খাবার খেয়ে কোনো রকম জীবনযাপন করছিলেন।

তবে গত ১২দিন ধরে কারো বাড়িতে আশ্রয় না পেয়ে বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান কমপ্লেক্স সংলগ্ন চিত্রা নদীর পাড়ে রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দ্বিতলা নৌকার নিচে আশ্রয় নেন তিনি। 

এআই/এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি