নারায়ণগঞ্জে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি, মিছিল
প্রকাশিত : ১৫:০৬, ২০ অক্টোবর ২০২০
নৌযান শ্রমিক কর্মচারীদের খাদ্যভাতা নির্ধারণ করে চলতি বছরের মার্চ থেকে কার্যকর করাসহ ১৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছে নারায়ণগঞ্জের নৌযান শ্রমিকরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জের ৫নং ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে কর্মবিরতির সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।
বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হাবিবুর রহমান মাস্টার, আক্তার হোসেন, কবির হোসেন, মিরাজ, হাফেজ শাহাদাতসহ জেলা কমিটির নেতাকর্মীরা।
১৫ দফা দাবিগুলোর অন্যতম হলো, নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারীদের খাদ্য ভাতা নির্ধারণ করে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে কার্যকর করতে হবে। নৌ আইন মেনে ডব্লিউটিসি সিরিয়াল অনুযায়ী সকল চট্টগ্রাম সমুদ্রগামী সকল লাইটারেজ জাহাজ চলাচল করতে হবে। মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, সার্ভিসবুক দিতে হবে এবং কথায় কথায় কোন শ্রমিকের চাকরিচ্যুত করা চলবে না ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জাহাজ দুর্ঘটনায় পড়লে তার দায় মাস্টারদেরকে দেওয়া যাবে না। জাহাজে সকল শ্রমিকদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। নৌযানে কাগজপত্র দেখার নামে নৌ প্রশাসনের সকল হয়রানি জুলুম, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে। ইনল্যান্ড মাস্টার ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় ও ডিপিডিসি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সকল প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে এবং কোর্স চলাকালীন সময়ে নৌযান থেকে শ্রমিকদের ছুটি বাধ্যতামূলক দিতে হবে।
এছাড়া নৌযান শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য দাতব্য চিকিৎসালয় ও বিশ্রামাগার নির্মাণ করতে হবে। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নৌযান শ্রমিক কর্মচারীদে ১২ লাখ টাকা মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সরকার কর্তৃক কল্যাণ তহবিল অর্থ প্রাপ্তির বিষয়টি সহজপন্থায় ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতগামী নৌযান শ্রমিকদের লোকাল এজেন্টের মাধ্যমে ল্যান্ডিং পাশ, সার্ভিস ভিসা ও জাহাজে ফ্রিজিং ব্যবস্থা না থাকায় শ্রমিকদের সুবিধামতো স্থানে দৈনন্দিন বাজারঘাট করার জন্য পারাপারের নৌকার ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন পয়েন্টে নদীপথে ডাকাতি, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজী বন্ধ করতে হবে। নৌপথে ড্রেজিং ও পর্যাপ্ত বয়াবাতি স্থাপন করতে হবে। ৮ ঘন্টার অধিক কাজের জন্য ওভারটাইম হিসেব করে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হবে। ঈদের পূর্বে ও ১ মে শ্রমিক দিবসে নৌযান শ্রমিকদের ছুটি দিতে হবে।
এর আগে সোমবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা অবধি রাজধানী ঢাকাস্থ বিআইডব্লিউটি’র প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও এতে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। দেশের বিভিন্নস্থানে নৌযান শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগেও একই দাবিতে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার জানান, ‘সোমবার দীর্ঘসময় নিয়ে বিআইডব্লিউটি’র প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও এতে কোন সুরহা হয়নি। যে কারণে আমাদের কর্মবিরতি চলছে এবং চলবে।’
এ সময় সকল নৌযান শ্রমিককে ঐক্যবদ্ধভাবে দাবি আদায়ের আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এআই//এমবি
আরও পড়ুন