ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

কুকুরের কামড়ে প্রাণ গেল যুবকের

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৮:৩৭, ২২ অক্টোবর ২০২০

নওগাঁর নিয়ামতপুর হাসপাতালে কুকুর কামড়ে প্রাণ গেল পলাশ মন্ডল (২৭) নামে দুই সন্তানের এক জনকের। সঠিক ভ্যাকসিন না থাকায় এবং কবিরাজের ভুল চিকিৎসায় গত ২০ অক্টোবর নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের দারাজপুর গ্রামে প্রাণহানির ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ।

মৃত পলাশ মন্ডল ওই গ্রামের জয়নাল আবেদীন মন্ডলের একমাত্র ছেলে। এই ঘটনায় একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জয়নাল মন্ডল। তিনি তার ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন স্থানীয় হাসপাতাল কর্তপক্ষ ও গ্রামের কবিরাজকে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে জয়নাল আবেদীন বৃহস্পতিবার বিকেলে নিযামতপুর প্রেসক্লাবে অভিযোগ করেন।

জয়নাল আবেদীন জানান- গত ২৩ জুলাই উপজেলার দারাজপুর কেজির মোড়ে পাগলা কুকুরে কামড় দেয় তার ছেলে পলাশকে। পরেরদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিনের জন্য যোগাযোগ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিন নেই বলে জানান। পুনঃরায় আবারও যোগাযোগ করে ব্যর্থ হওয়ায় পাশের গ্রামের রাজাপুরের কবিরাজ আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে ২ হাজার টাকার বিনিময়ে ২৮ দিনের ব্যবধানে ৫টি ভ্যাকসিন ক্রয় করে পলাশের শরীরে পুশ করা হয়। এর একপর্যায়ে গত ১৩ অক্টোবর থেকে পলাশের শারীরিক অবস্থা অবনতি হতে থাকে। ১৭ অক্টোবর তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়য়। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানান- পলাশ জলাতংক রোগে আক্রান্ত। তার ভালো হওয়ার আর কোনও সুযোগ নেই। 

পুত্র হারা বাবা বলেন, অনেকটা বাধ্য ও নিরাশ হয়ে ১৮ অক্টোবর পলাশকে নিয়ে বাড়ি চলে আসি। বাড়ি আসার ২ দিন পর ২০ অক্টোবর রাতে পলাশ মারা যায়। 

কান্নারত কণ্ঠে তিনি বলেন- হাসপাতালে ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে আমি আর কবিরাজের কাছে যেতাম না। আর কবিরাজ প্রকৃত ভ্যাকসিন না দেওয়ায় ও তার অবহেলায় আমি সন্তান হারা হলাম। আমার দুই নাতী, তারা পিতৃহারা হলো। আমি এর বিচার চাই।
 
এ বিষয়ে কবিরাজ আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- পলাশকে আমি কোনও ভ্যাকসিন প্রদান করি নাই। সে কিভাবে মারা গেছে আমি বলতে পারবো না।

তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাওসার আলী বলেন- কবিরাজ আনোয়ার হোসেনই পলাশকে কুকুরে কামড়ানোর ভ্যাকসিন প্রদান করেন। ওই সময় পলাশের পরিবারকে ভ্যাকসিন না দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বললে হয়তো পলাশ বেঁচে যেতো। 

এ ব্যাপারে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তোফাজ্জল হোসেন বলেন- বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে কুকুর কামড়ানো ভ্যাকসিন নেই। ভ্যাকসিনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আর ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য পলাশের পরবিারের লোকজন হাসপাতাপলে এলে তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি