ক্রসফায়ারে হত্যাচেষ্টা, সাবেক ওসিসহ ১১ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশিত : ১৬:১০, ৩ নভেম্বর ২০২০

নির্যাতনে পা হারানো গিয়াস উদ্দিন দুলাল
ক্রসফায়ারে হত্যার চেষ্টা ও ইয়াবা দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ এনে ছাগলনাইয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম মোর্শেদসহ ১১ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) সকালে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে মোঃ গিয়াস উদ্দিন দুলাল নামে এক ব্যক্তি এ মামলা করেন।
মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্য ১১ জন, বাকী দুইজন পুলিশের সোর্স।
মামলার বিবরণে জানা যায়- বাদি গিয়াস উদ্দিন দুলাল একজন পিকআপ চালক। তিনি গত বছরের ১৭ জানুয়ারী দুপুরে ফেনী সদরের কাজীরবাগে মাটি ক্যারিং করার সময় আবুল হাসেম ও আবুল খায়ের নামে দুই সোর্সসহ থানার পুলিশ সদস্যরা এসে মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। এসময় তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিকালে তারা কাজীরবাগ থেকে তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে ছাগলনাইয়ার পাঠাননগর এলাকায় ব্রাদার্স ব্রিকফিল্ডে নিয়ে যায়। সেখানে ওসি মোর্শেদ এসে চোখ বেঁধে পুনঃরায় ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। কিন্তু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়।
পরে খবর পেয়ে মা ও বোন এক লাখ টাকা দেবার কথা বললেও ওসি মোর্শেদ তাতে রাজী না হয়ে পুনঃরায় চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে করে একই উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের রাস্তার মাথায় একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ওসি মোর্শেদের নির্দেশে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে ওসি মোর্শেদ ঘটনাস্থলে সঙ্গে থাকা সুকান্ত বড়ুয়া নামে এক পুলিশ সদস্যের শটগান নিয়ে দুলালের ডান পায়ে ৩ রাউন্ড গুলি করে। এরপর তারা এলোপাতাড়ি লাথি মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করার চেষ্টা করে।
পরে সে অজ্ঞান হয়ে পড়লে মৃত্যু হয়েছে ভেবে তারা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থা আশংকাজনক দেখে কতর্বরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপাচার করে দুলালের ডান পা কেটে বাদ দেয়। পরে ৭ দিন পুলিশের হেফাজতে চট্রগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফের তার বিরুদ্ধে ১৪শ পিস ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করে দুলালকে কারাগারে প্রেরণ করে তারা।
গিয়াস উদ্দিন দুলাল বলেন, পঙ্গু হবার পর থেকে অসুস্থ, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি, তাই মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন তিনি।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন নান্নু জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এনএস/
আরও পড়ুন