নোয়াখালীতে নারীর প্রতি সহিংসতা বিরোধী তারুণ্যের সাইকেল মার্চ
প্রকাশিত : ১৬:০২, ২৫ নভেম্বর ২০২০
‘ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনসহ সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ’ শ্লোগানকে সামনে রেখে আজ নোয়াখালীতে নারীর প্রতি সহিংসতা বিরোধী তারুণ্যের সাইকেল মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা এই সময় ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি বন্ধ করা, নারীদের ঘরে-বাইরে-কর্মস্থলে-পরিবহনে নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা, ধর্মীয়সহ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নারীবিরোধী বক্তব্য বন্ধ করা, যৌন হয়রানি সংক্রান্ত মামলার তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চালু করার দাবি জানায়।
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষব্যাপী প্রচারণার অংশ হিসেবে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের সহায়তায় পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যাকশন নেটওয়ার্ক-প্রাণ, নোয়াখালী জেলা স্কাউট এবং একশানএইড বাংলাদেশ যৌথভাবে সাইকেল মার্চের আয়োজন করে।
বুধবার সকাল ১০টায় জেলা শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের সামনে থেকে সাইকেল মার্চের উদ্বোধন করেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান।
এ সময় তিনি বলেন, ‘মানুষকে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতন করার এটি একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। দেশের সাধারণ মানুষ, ছাত্র, যুবা এবং কৃষকরা যখন জেগে উঠবে এ ধরনের নারী এবং শিশু নির্যাতন তখনই বন্ধ করা সম্ভব হবে।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। এছাড়াও সংহতি বক্তব্য রাখেন, নারী অধিকার নেত্রী নুর নাহার রিনি, জেলা স্কাউটের সেক্রেটারি আহম্মদ হোসেন ধনু, প্রাণের প্রধান নির্বাহী নুরুল আলম মাসুদ।
আয়োজকরা জানান, সাম্প্রতিককালে নোয়াখালী জেলায় নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনার বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই নোয়াখালী জেলায় ১৯টি ধর্ষণসহ নারীর প্রতি ৪১টি সহিংস ঘটনা ঘটেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, এই মাসে ধর্ষণ ১৯টি, ধর্ষণচেষ্টা সাতটি, হত্যা পাঁচটি, অপহরণ একটি, আত্মহত্যা একটি, শারীরিক নির্যাতন দুটি, বিবস্ত্র করে নির্যাতন একটি, শ্লীলতাহানির চেষ্টা দুটি, যৌন হয়রানি দুটি, কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাড়িতে হামলা ও হয়রানির দুটি ঘটনা ঘটে।
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বক্তারা, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতন বিরোধী সেল কার্যকর করা, সিডো সনদে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইন ও প্রথা বিলোপ; তদন্তকালে ভুক্তভোগীকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করা এবং তার আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদেরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অন্তর্ভুক্ত করা এবং ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার দাবি জানান।
নারীর প্রতি সহিংসতা বিরোধী সাইকেল মার্চে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দেড় শতাধিক তরুণ- তরুণী অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু স্কয়ার থেকে যাত্রা শুরু করে মাইজদি নতুন বাসস্ট্যান্ড এবং হরিণারায়নপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ঘুরে নোয়াখালী শিল্পকলা একাডেমীতে এসে শেষ হয়।
এআই/এসএ/
আরও পড়ুন