নওগাঁয় শিক্ষককে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, মেলেনি প্রতিকার
প্রকাশিত : ২৩:২৩, ৩০ নভেম্বর ২০২০ | আপডেট: ১৫:৫১, ১ ডিসেম্বর ২০২০
প্রবীণ শিক্ষক নাসিম উদ্দিন (৫৮)
নওগাঁর মান্দা উপজেলার পাজরভাঙ্গা এলাকায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে আবাসিক এলাকায় অবৈধ করাত কল স্থাপনের প্রতিবাদ করায় নাসিম উদ্দিন (৫৮) নামের এক প্রবীণ শিক্ষকের ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। মোবাইল ফোনে রের্কডকৃত সেই দৃশ্য ভাইরাল হওয়ায় ওই শিক্ষক লজ্জায় অপমানে বাড়িতে এখন অন্তরীণ হয়ে আছেন।
এদিকে গত বুধবারের এই ঘটনায় বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ করার পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও মিলছে না প্রতিকার।
ভিডিওতে দেখা যায়- মান্দা উপজেলার পাঁজরভাঙ্গা আবাসিক এলাকার স'মিলে দিনদুপুরে চলছে নির্যাতন। প্রবীণ শিক্ষক নাসিম উদ্দিনকে লাঞ্ছনা আর মারধরের সেই দৃশ্য ধারণ হচ্ছে মোবাইল ফোনে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে।
নির্যাতনের শিকার প্রবীণ শিক্ষক নাসিম উদ্দিনের অভিযোগ- রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলা থেকে সম্প্রতি নওগাঁর মান্দা উপজেলার পাজরভাঙ্গা গ্রামে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন তিনি। এলাকায় অবৈধ স'মিলে মানুষের ভোগান্তি দেখে তার প্রতিবাদ করেন ওই শিক্ষক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা ও নির্যাতন চালায় করাতকলের মালিক দেলশাদ আলী মন্ডলের দুই ছেলে এরশাদ আলী মন্ডল, আব্দুর রাজ্জাকসহ তাদের সহযোগীরা।
নির্যাতনের এক পর্যায়ে নাসির উদ্দিনকে মেরে তাকে বিবস্ত্র করে ফেলা হয়। এ সময় গ্রামবাসী ও তার আত্মীয়-স্বজন এগিয়ে এসে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। গত বুধবার এ ব্যাপারে বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও নির্বিকার পুলিশ প্রশাসন।
স’মিল মালিক দেলশাদ হোসেন মন্ডলের দাবি- আইন মেনেই চলে করাতকল। ৩৫ বছর ধরে পাজারভাঙ্গার ওই স্থানে স'মিলটি চালিয়ে আসছেন তারা। কোনওদিনই কারও সমস্যা হয়নি। মূলত নাসির উদ্দিনের জামাতা রেজাউল ইসলামের কাছে পাওনা রড-সিমেন্টের ৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে এই উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার তাদের হয়রানী করায় হাতা-হাতি হলেও শিক্ষক নাসির উদ্দিনকে বিবস্ত্র করার অভিযোগ অস্বীকার করছেন তিনি।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনার পর শিক্ষক নাসির উদ্দিনের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তারই তদন্ত চলছে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ঘটনার পর পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে কিনা বা কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে- জানতে চাওয়া হলে পরে কথা বলবেন বলে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে রাজী হননি মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর রহমান।
এনএস/
আরও পড়ুন