প্রভাবশালীর নেতৃত্বে বাড়ীতে হামলা-আগুন, আহত-৭
প্রকাশিত : ২০:০৩, ২ ডিসেম্বর ২০২০
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়পুর ইউনিয়নের ভূল্লী বাজারে এক ব্যক্তি ভাড়াটিয়ে সেজে দোকান ঘরে ঢুকে মালিকানা দাবী করে আসছিল। এর প্রেক্ষিতে ঘরের মালিক কয়েকদিন আগে তাকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। কিন্ত তিনি মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে সরকার দলীয় প্রভাবশালী এক নেতার নেতৃত্বে ঘর মালিকের বাড়ীতে আগুন, হামলা-ভাংচুর, লুৎপাট করে কয়েকটি দোকান ঘর দখল করেন এবং হামলা চালিয়ে ঘরের প্রকৃত মালিক ও স্ত্রী, কন্যাসহ ৭ জনকে আহত করেন। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে আবারো যে কোন মূর্হতে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়রা আশংকা প্রকাশ করেছেন।
আহতরা হলেন ইয়াকুব আলী (৬৫), সালমা বেগম (৬০), রোকেয়া বেগম, (৪২), সুফিয়া বেগম (৫৩), নাসিমা আক্তার (৩৫), শহিদুল ইসলাম (৩০), রোমানা আফরোজ (২৩)।
জানা যায়, স্থানীয় ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী ১৯৭৫ সাল হতে ক্রয় সুত্রে জমি ও জমিতে দোকান ঘর তুলে ভোগদখল করে আসছেন। সেই ভোগদখলিয় জমিতে কিছু দোকান ঘর নির্মান করে তিনি চুক্তিভিত্তিক ভাড়া প্রদান করেন। ভাড়াটিয়াদের মধ্যে বাহার উদ্দীন, লাভলী বেগম, ইউনুছ আলী ভাড়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও তারা ভাড়া দিতে প্রায় দুই বছর ধরে তালবাহানা করেন। এরমধ্যে দোকান ঘরের মালিক ইয়াকুব আলী ভাড়াটিয়াদের দোকান ছেড়ে দিতে বললে আজ-কাল বলে তারা সময় ক্ষেপন করতে থাকে।
এবিষয়ে ভাড়াটিয়েদের অনেক বার তাগদা দেয়া সত্বেও তারা ঘর ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে নিরুপায় হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম নজুর বরবার আবেদন দাখিল করেন। ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য গ্রাম্য আদালতের মাধ্যমে নিস্পত্তি করার জন্য উভয় পক্ষকে তলব করেন। কিন্তু বাহার উদ্দীন, লাভলী বেগম, ইউনুছ আলী অত্যান্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তারা চেয়ারম্যানের কথার কোন কর্নপাতই করেননি। পরে ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বাদী পক্ষের কাগজ পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দেন।
বুধবার সরোজমিনে গেলে ভূল্লী বাজারের চাল ব্যবাসীয় মকবুল হোসেন বলেন, বাহার উদ্দীন, লাভলী বেগম, ইউনুছ আলী ভাড়াটিয়ে ছিলেন কিন্তু শুনছি এখন তারা নিজেদের মালিক দাবী করছে। মশিউর রহমান, আহমম্মদী, স্বপনসহ অনেকে বলেন জোর যার মূল্লুক তার। এখানে আমাদের কথা বলে লাভ কি ? মঙ্গলবার রাতে বাহার উদ্দীন, লাভলী বেগম ও ইউনুচ আলী স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার নেতৃত্বে ইয়াকুব আলীর বাড়ীতে আগুন, হামলা-ভাংচুর, লুৎপাট চালায়।
দোকান ঘর মালিক ইয়াকুব আলী বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীর নেতৃত্বে এবং একদল পুলিশের উপস্থিতে ভূমিদস্যূ সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ী ও গুদামের তালা ভেঙ্গে আগুন, হামলা-ভাংচুর, লুৎপাট চালায়। এসময় ট্রাক্টরে তারা আমার প্রায় ১ কোটি টাকার মালামাল নিয়ে গেছে।
বাহার উদ্দীন, লাভলী বেগম, ইউনুচ আলী ভাড়াটিয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমরা সকলে পরবর্তীতে দোকানঘর গুলো জমির মালিক সফিউলের কাছে ক্রয় করে নিয়েছি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তদন্ত একেএম আতিকুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ৯৯৯ নম্বরের কল সেন্টারের নির্দেশে আমরা ভূল্লীতে গিয়ে দেখি একটি দোকান ঘরের দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ চলছে। আমরা তখন পরিস্থিতি শান্ত করি এবং উভয় পক্ষকে এজাহার দিতে বলেছি। এজাহার দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরকে//
আরও পড়ুন