জনবল সংকটে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা ব্যাহত
প্রকাশিত : ১৩:৫৩, ৭ ডিসেম্বর ২০২০ | আপডেট: ১৩:৫৬, ৭ ডিসেম্বর ২০২০
যশোরের শার্শা উপজেলার প্রায় ৩ লাখ জনসংখ্যার এক মাত্র ৫০ শষ্যার সরকারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি (নাভারন হাসপাতাল) নিজেই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে। পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গোটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা আর্বজনা। দূর্গন্ধে রোগীরা টিকতে পারছে না স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ময়লা আবর্জনার পাশেই রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘নো মাস্ক, নো এন্ট্রি’ লেখা থাকলেও ডাক্তার ও কর্মচারিরা মাস্ক বাদে রোগীদের সেবা দিচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক মাত্র এ্যাম্বুলেন্সটি বছরের পর বছর পড়ে আছে অচল হয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির যেখানে সেখানে পড়ে আছে রোগীর ব্যবহারিত গজ ব্যান্ডেজসহ অন্যান্য উপকরণ। জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে যথাযথ পরিসেবা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত কর্মচারী এবং রোগীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা না থাকার কারণে করোনা ঝুঁকির মধ্যে মাস্কবিহীন অবস্থায় চলছে সকল কার্যক্রম।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে জুনিয়ার কনসালটেন্ট ১০টি পদের মধ্যে সব কয়টি শূন্য। মেডিকেল অফিসারের ১০টির মধ্যে আছে মাত্র ৩টি। ফলে সকাল ৯টায় আসা রোগী দুপুর পর্যন্ত পাচ্ছে না কোন সেবা। ১০ বছর ধরে এক মাত্র এ্যাম্বুলেন্সটি চলার পথে মুখ থুবড়ে পড়ে। এতে প্রতিনিয়ত রোগীদেরকে পড়তে হয় বিপাকে। ভাল চিকিৎসা দিতে না পারায় ভর্তি হওয়া প্রায় রোগীকে যশোর ২৫০ শষ্যা হাসপাতালে স্থানন্তর করে দেওয়া হয়।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালের নোংরা পরিবেশের কারণে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। যেখানে সেখানে ময়লা আর্বজনা ফেলে রাখা হচ্ছে। এই হাসপাতালে আমরা রোগী এনে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। শার্শা উপজেলায় একটি মাত্র হাসপাতাল কিন্তু অসুস্থ রোগী এবং আমরা যারা রোগীর সাথে আসি দূর্গন্ধের কারণে আমরাও অসুস্থ হয়ে পড়ি। আর রোগী সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে অসুস্থ হয়েই পড়েন বেশি। আমরা চাই হাসপাতালটি সুন্দর করা হোক।
অসুস্থ মাকে নিয়ে আসা টুম্পা খাতুন বলেন, ‘সকাল ৯টার সময় রোগী নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। এখন সাড়ে ১২টা বাজতে গেছে। এখনও আমার রোগী দেখলো না। সেবা নিতে এসে আমরা সেবা পাচ্ছি না।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্স চালক সাদেক হোসেন জানান, এখানে একটি এ্যাম্বুলেন্স আছে। যার একমাত্র চালক আমি। এ্যাম্বুলেন্সটি প্রায় ১২ বছর এখানে চলছে। এটির অবস্থা খুবই খারাপ। একটা মুমূর্ষ রোগী নিয়ে দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছানো যায় না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার ইউসুফ আলী বলেন, ‘এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে চতুর্থ শ্রেনীর কর্মী নিয়োগ বন্ধ আছে। এই মুহুর্তে চতুর্থ শ্রেনীর কর্মী খুব প্রয়োজন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়ার কনসালটেন্ট ও মেডিকেল অফিসার থাকলে আরও বেশি সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।’
এসএ/
আরও পড়ুন