সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
প্রকাশিত : ২১:৩৬, ৮ ডিসেম্বর ২০২০
সুন্দরবনের নদী ও খালগুলো দিন দিন মাছ শূণ্য হয়ে যাচ্ছে। মাছের সাথে মরছে অন্যান্য জলজ প্রাণীও। জেলেরা বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার পাশাপাশি বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
এদিকে সুন্দরবন জুড়ে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন ধরে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন জেলে আটকও হয়েছেন।
জানা গেছে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ছয় হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি। এর মধ্যে নদী, খাল ও খাঁড়ি রয়েছে সতেরশ’ বর্গকিলোমিটার। এগুলোতে ইলিশ, চিংড়ি, রুপচাঁদাসহ ৪০০ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের খুলনা শাখার সমন্বয়কারী এ্যাড. মো. বাবুল হাওলাদার জানান, প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ছত্র-ছায়ায় এক শ্রেণীর জেলে নৌকা ও ট্রলার নিয়ে বনের ভিতরে ঢুকে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার করছে। এতে শুধু মাছ নয় প্রায় সব জলজ প্রাণি মারা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়-বিষ দিয়ে মাছ শিকার করায় সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
খুলনা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ফরেষ্ট এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্য্পক মোহাম্মদ শরীফ হাসান লিমন বলেন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে খালগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের ফলে বিষাক্ত পানির কারণে বাঘ-হরিণসহ প্রাণিকূলে বড় ক্ষতি হতে পারে। এজন্য সুন্দরবনকে সুরক্ষিত রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ এর উপরও সংশ্লিষ্টদের জোর দিতে হবে।
তবে বিষ প্রয়োগে মাছ ধরা বন্ধে তৎপরতা, সুন্দরবনে অবৈধ চোরা শিকারী রুখতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। সম্প্রতি খুলনা জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করেছে। জব্দ করা হয় বিপুল পরিমান বিষ, জাল ও নৌকা।
খুলনা জেলার পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ জানান, গত ১৭ জুলাই চার বোতল কীটনাশকসহ আটজন, ২৮ আগষ্ট এক বোতল কীটনাশকসহ দুইজন, ২৯ অক্টোবর দুই বোতল কীটনাশকসহ তিনজন, ২৬ নভেম্বর দুই বোতল কীটনাশকসহ তিনজন এবং চলতি মাসের ১ ডিসেম্বর চার বোতল কীটনাশকসহ নয়জনকে আটক করেন তারা।
এসময় বিপুল পরিমানের বিষ বা কীটনাশক মিশ্রিত মাছও জব্দ করা হয় বলেও জানান এস পি এম শফিউল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনকে সুরক্ষিত রাখতে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ-নদীতে বিষ দিয়ে মাছ শিকার হচ্ছে স্বীকার করে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘এসব অসাধুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের প্রতিটি ক্যাম্প ও ষ্টেশনের বনরক্ষীদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে’। তবে সুন্দরবনের নদীগুলোতে মাছ শুন্য না হলেও মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান এই বন কর্মকর্তা।
কেআই//
আরও পড়ুন