ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আদালতের অভিযান চললেও যমুনায় দেদারসে বালু লুট 

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৪:৩৭, ১০ ডিসেম্বর ২০২০

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পূর্বাঞ্চল খ্যাত খুকনী, জালালপুর, কৈজুরী, গালা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় আবারো শুরু হয়েছে যমুনা নদী থেকে ব্যাপকভাবে বালু লুট। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হঠাৎ ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চললেও তা মানছেন না বালুদস্যু সন্ত্রাসীরা। 

এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে অভিযোগ দেয়া হলেও কার্যকরি পদক্ষেপ না থাকায় কোটি-কোটি টাকার বালু উত্তোলন করছে চক্রটি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড পদক্ষেপ নেবার কথা জানিয়েছে। 

জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার পুর্বাঞ্চল খুকনী ইউনিয়নের আড়কান্দি, জালালপুর ইউনিয়য়ের পাকড়তলা-ঘাটাবাড়ি, কৈজুরী ইউনিয়নের পাঁচিল, জকতলাসহ গালা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা হতে অবাধে ড্রেজার দিয়ে কোটি-কোটি টাকার বালু উত্তোলন শুরু করেছে বালু দস্যুরা। পুলিশ অভিযান চালালেও তা নামেমাত্র, বরং সুবিধা আদায়ের জন্য। 

আর উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালতের যে অভিযান পরিচালনা করছে তাও যথার্থ মনে না করে চক্রটি আবারো শুরু করেছে বালু লুট। পুরো যমুনাজুড়ে এ যেন বালু দস্যুদের স্বর্গ রাজ্য। তারা যমুনার এ বালুকে নাম দিয়েছে কাচা সোনা। কারণ, বালুর মুল্য সোনার মতই দামি।

সামান্য খরচে তা ড্রেজার দিয়ে উত্তোলন করে আশপাশেই চড়া দামে বিক্রি করছে। অতি লাভের কারণেই সন্ত্রাসীরা কৌশলে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে এই বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী তীরবর্তী বাক্ষ্মনগ্রাম হতে পাঁচিল পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটারজুড়ে ভাঙ্গন এখন তীব্র আকার ধারণ করছে।

মুহূর্তের মধ্যেই বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি আর আবাদি জমি। তাই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে দ্রুত কার্যকরি পদক্ষেপ চেয়েছে স্থানীয়রা। এজন্য উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগও দায়ের করেছে ভুক্তভোগীরা। 

এরপর গত ২৯ নভেম্বর শাহজাদপুর উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাল আদালত অভিযান চালিয়ে খুকনীর আড়কান্দিতে চলা ড্রেজারে অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ড্রেজারটি বন্ধ করে দিয়ে আসে। এরপর আবারো সেখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে মাটি। 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের কাছে পদক্ষেপ চেয়ে অভিযোগ দাখিলকারী রুপসী গ্রামের রুবেল ভুঁইয়াসহ ঘাটাবাড়ি গ্রামের কয়েক জন জানান, ‘ভেবেছিলাম প্রশাসনের অভিযানের পর আর নদী থেকে বালু উত্তোলন হবে না। বাড়ি-ঘর ভাঙ্গনমুক্ত থাকবে। কিন্তু তা নয়। আবারো তারা নির্ভয়ে বালু তোলা শুরু করেছে। আমরা নিষেধ করতে গেলে তারা হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা। ’

এদিকে বর্তমানে নদী থেকে বালু তোলা বন্ধে বালু দস্যু ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। তাই দ্রুত বালু তোলা বন্ধের জন্য পদেক্ষপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা। 

এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা জানান, ‘কোথাও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেয়া হবে না। আমরা দ্রুতই আবারও পদক্ষেপ নেব ‘

এদিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, ‘যমুনা হতে চর কাটা বা বালু উত্তোলের জন্য কোন অনুমতি নেই। তারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। যা নিয়ম বহির্ভূত। এজন্য পাউবো কার্যকরি পদক্ষেপ নেবে।’
এআই/এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি