‘পৌরসভাকে ‘গ’ থেকে ‘খ’ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করেছি’
প্রকাশিত : ২১:০৩, ১০ ডিসেম্বর ২০২০ | আপডেট: ২১:০৯, ১০ ডিসেম্বর ২০২০
সোনাতলা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আকন্দ নান্নুর সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন সাজেদুর আবেদীন শান্ত।
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও পনেরো বছর পর ২০১৬ সালের ৭ আগষ্ট প্রথম নির্বাচন হয় বগুড়ার সোনাতলা পৌরসভায়। এতে সোনাতলার প্রথম নির্বাচিত মেয়র হিসাবে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী ও নবনির্বাচিত বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম আকন্দ নান্নু।
একুশে টিভি অনলাইন’র সোনাতলা সংবাদদাতা সাজেদুর আবেদীন শান্তর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে উঠে আসে পৌরসভা নিয়ে তার নানাবিধ পরিকল্পনা ও উন্নয়নের দিকগুলো। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো-
একুশে টিভি অনলাইন: পৌর এলাকায় চোখে পড়ার মতো কি কি কাজ করেছেন?
সোনাতলা পৌর মেয়র: পৌরসভা গঠনের ১৫ বছর পর যখন মেয়র নির্বাচিত হলাম, তখন দেখলাম পৌর এলাকার সকল রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। অনেকটা বিধ্বস্তভাবে পৌরসভাকে পেয়েছিলাম। সত্য কথা বলতে কি- আমি উদ্ধৃতি দিয়ে বলতে পারি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান যেমন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের ভার গ্রহণ করেন, তেমনি আমিও ১৬ বছর পর একটি বিধ্বস্ত পৌরসভার ভার গ্রহণ করি। তারপরেও দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র নয় মাসেই আমি পৌরসভাকে ‘গ’ শ্রেণী থেকে ‘খ’ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করেছি।
এছাড়াও পৌর এলাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি করেছি। এতে প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়। এছাড়াও আরও বিভিন্ন কাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজের ভাগিদার আমার পৌরসভার সকল কাউন্সিলরবৃন্দ। এছাড়াও পৌরসভার শোভা বর্ধনের জন্য বেশ কিছু কাজ হাতে নিয়েছি। পৌর এলাকার ঘোড়াপীর নামক তিনমাথা স্থানে ঝর্ণাসহ একটা মুক্তিযুদ্ধ স্কয়ার করবো। কাবিলপুর ক্যানেলে শোভা বর্ধনের জন্য স্টিমেট করেছি। পৌরসভার ময়লা ফেলার জন্য ১০ বিঘা জমি কিনেছি, সেখানে ময়লা ফেলার ডাম্পিং করবো। এছাড়াও আমি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন রাস্তায় কর্মক্লান্ত মানুষের বিশ্রামের জন্য বিশ্রামাগার তৈরী করেছি। এর একটা স্লোগান আছে, তা হলো- বিশ্রাম যেন পরিশ্রমের অংশ হয়। কারণ বিনা কারণে মানুষ যেন এই জায়গায় বিশ্রাম না নেয়, পরিশ্রম করে যেন বিশ্রাম নেয়। তাই আমি নিজস্ব অর্থায়নে এই বিশ্রামাগারটি করেছি।
একুশে টিভি অনলাইন: পৌরসভার নাগরিকদের সঙ্গে আপনার সরাসরি সম্পৃকতা কেমন?
সোনাতলা পৌর মেয়র: এটা যদিও ব্যক্তিগতভাবে বলা ঠিক না। তাও বলি- আমি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই মানুষের পাশে ছিলাম সবসময়। মানুষের বিপদে আপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছি। এছাড়াও পৌরসভার কাজ ও গুরুত্বপূর্ণ মিটিং ছাড়াও আমি বেশিরভাগ সময় জনগণের মাঝে থাকি। পৌরবাসীর জন্য যাদের কবর দেওয়ার জায়গা নেই তাদের জন্য চারটি কবরস্থান করেছি। আমরা জনগণের যে ট্যাক্সটা নেই, কোনও সময় তা জোর করে আদায় করি না। যা সরকারি নীতিমালায় আছে সেভাবেই আদায় করে থাকি।
একুশে টিভি অনলাইন: মাদক, সন্ত্রাস-দুর্নীতি দমনে আপনি কতটুকু সোচ্চার?
পৌর মেয়র: মাদক, সন্ত্রাস-দুর্নীতি, দুঃসাশন, অন্যায়- এগুলো সামাজিক ব্যধি হয়ে গেছে। তবে পৌরসভার কোনও নাগরিক বলতে পারবেনা যে, আমার পৌরসভায় কোনও দুর্নীতি বা অনিয়ম হয়েছে। এছাড়াও যারা মাদক কারবার করে তাদেরকে ডেকে এনে বিভিন্ন শালিস-দরবারের মাধ্যমে বুঝিয়ে শাস্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও মাঝে মাঝে আমরা থানায় যোগাযোগ করে মাদক নির্মূলে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকি।
একুশে টিভি অনলাইন: যুব সমাজের জন্য কল্যাণকর কাজ?
পৌর মেয়র: যুব সমাজকে মাদক, সন্ত্রাস থেকে দূরে রাখার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। খেলার সরঞ্জামসহ বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে থাকি। সোনাতলা খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির আন্ডারে ছেলে ও মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের খেলার ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে। যুবসমাজকে ভালো রাখতে ও অসামাজিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে জনবহুল জায়গাগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে এবং তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি। নিরিবিলি জায়গাগুলোতে যেখানে সামাজিক অবক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সে জায়গাগুলো নজরদারিতে রাখার চেষ্টা করছি।
একুশে টিভি অনলাইন: এবার দলীয় মননোয়নে কতটুকু আশাবাদী?
পৌর মেয়র: গত নির্বাচনে আমি দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিবেশ-পরিস্থিতি, দলীয় ও স্থানীয় কোন্দলের কারণে মনোনয়ন পাইনি। তবে আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তার এই উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে এবার যোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবেন এবং এবার আমি দলীয়ভাবে মনোনয়ন পাবো বলে আশা করছি। জনগণ আমাকে আবারও নির্বাচিত করলে আমি পৌরসভার বাকি কাজগুলো শতভাগ শেষ করবো, ইনশাআল্লাহ।
এনএস/
আরও পড়ুন