ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রাস্তায় পাওয়া শিশুকে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি বাবা-মা’র

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:৪৬, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০

Ekushey Television Ltd.

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কাজিরহাট বাজারে রাস্তায় পাওয়া ৭ বছরের শিশুটির ঠিকানা পাওয়া গেছে। তবে তার বৈধ অভিভাবক তথা পিতা-মাতা কিংবা ভাই শিশুটিকে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। শেষ পর্যন্ত তার আশ্রয় হয়েছে জাস্টিস কেয়ারে।

ঘটনাটি গত ১৩ ডিসেম্বর রোববার বেলা আনুমানিক ১২টার দিকে। বাজারের কিছু লোক জড়ো হয়ে অচেনা এক শিশু ছেলেকে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞাসা করছে, কিন্তু শিশুটি কিছুতেই কিছু বলছে না। সেখানে উপস্থিত লোকজন শিশুটির কাছে নিয়ে আদর করে পরিচয়-ঠিকানা জানার চেষ্টা করলেন। অনেকক্ষণ জিজ্ঞাসা করার পর শুধুমাত্র নিজের নাম সোবহান ও বাবা মোক্তার হোসেন ও মায়ের নাম মর্জিনা খাতুন ছাড়া কিছুই বলতে পারলো না শিশুটি। 

বিভিন্নভাবে কথা বলে শেষমেশ গ্রামের নাম জানা গেলো অনুপামপুর। কিন্তু জেলা, উপজেলা বলতে পারলো না। তাৎক্ষণিক শিশুটিকে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবিরের জিম্মায় দেন সরদার জিল্লুর নামে এক সমাজসেবী।

এরপর নৈতিক দায়বদ্ধতা আর বিবেকের তাড়নায় শুধু গ্রামের নাম নিয়ে চললো ঠিকানা সংগ্রহের কাজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন পরিচিত লোকের মাধ্যমে ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের অনুপামপুর গ্রামে শিশুটির বাড়ি বলে নিশ্চিত হয়।

কলারোয়া থানা পুলিশ যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথে প্রচেষ্টা চালালেন। এরপর ওই গ্রামের (অনুপামপুর) ইউপি সদস্য মোবারক হোসেন ও সংশ্লিষ্ট নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রনি লস্কারের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিশুটিকে বাড়িতে খবর পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়।

কিন্তু শিশুটির বৈধ অভিভাবক তথা পিতা-মাতা কিংবা ভাই শিশুটিকে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি  জানায়। তখন বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বরকে শিশুটিকে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানালে তাদের পক্ষ থেকেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। 

শিশু ছেলে সোবহান জানায়, শুক্রবারে তার মা তাকে বেদম মারপিট করলে সে বাড়ি থেকে রাগ করে চলে আসে। তার বাবা পেশায় একজন ভিক্ষুক। নিয়ামতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রনি লস্কার ও মেম্বর মোবারকও এর সত্যতা নিশ্চিত করেন। 

কলারোয়া থানার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, উপায়ান্ত না পেয়ে ‘জাস্টিস এন্ড কেয়ার’ নামে যশোরের একটি বেসরকারি সংস্থার সাথে যোগাযোগ করা হয়। অতঃপর ১৪ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যার দিকে কলারোয়া থানার আসেন ‘জাস্টিস এন্ড কেয়ার’ সংস্থার ৩ জন কর্মকর্তা। তাদের নিকট তুলে দেয়া হয় ৭ বছরের ওই শিশুটিকে।

‘জাস্টিস এন্ড কেয়ার’র সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার এবিএম মুহিদ হোসেন সংস্থার পক্ষে স্বাক্ষর করে শিশুটিকে নিয়ে যান। 

যত দ্রুত সম্ভব শিশুটিকে তার অভিভাবকের হাতে তুলে দিবেন এবং ওই অস্বচ্ছল পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
এএইচ/এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি