নাটোরে বেড়েছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ
প্রকাশিত : ১১:৪৫, ২০ ডিসেম্বর ২০২০
নাটোরে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত জনজীবন। তীব্র শীতে কষ্টে দিন কাটছে খেটে খাওয়া মানুষের। এতে বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশি ও নিউমোনিয়ায় দুই শতাধিক লোক আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাটোর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মঞ্জুর আলম।
এই শীত মৌসুমে ঠান্ডাজনিত রোগসহ মহামারি করোনার চিকিৎসার সকল প্রস্তুতি নেয়া আছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শীতজনিতরোগে আক্রান্তদের গরম কাপড় পরিধান ও পুষ্টিকর খাবার খেতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
গত কয়েক দিনে নাটোরে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে শিশুসহ বৃদ্ধরা। গত এক সপ্তাহে নাটোর সদর হাসপাতালে দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। এদিকে শীতে দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের জন্য গরম কাপড় বিতরণ শুরু করেছে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন।
উত্তরেরর জেলা নাটোরে গত কয়েকদিনে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে শিশুসহ বৃদ্ধরা। কনকনে শীতে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের নিয়ে বিপাকে পরিবারের সদস্যরা। ঠান্ডা গরমে অসুস্থ অবস্থায় নিরাময় পেতে ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। ঠান্ডাজনিত কারণে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসা পেতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় ওষুধ।
জমজ সন্তান নিয়ে গত মঙ্গলবার হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন সদর উপজেলার পাইকোরদোল গ্রামের খোরশেদের স্ত্রী খাদিজা। ঠান্ডাজনিত রোগসহ জন্ডিসে আক্রান্ত হয় একজন। সুস্থ হওয়ায় শনিবার তাদের ছেড়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রামাইগাছি গ্রামের আল আমিন জানান, ‘ডায়ারিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার এক বছর বয়সী শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। স্যালাইন দেয়া হলেও কিছু ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে।’
শিশু ওয়ার্ডের সেবিকা আয়েশা সিদ্দিক, লাভলি বেগম ও আসমা খাতুন জানান, ‘শীতে ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হলেও কিছু ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। রোববার সেগুলো সরবরাহ পাওয়া যাবে।’
হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ডা. সৌরভ জানান,‘ঠান্ডা আবহাওয়ায় জ্বর, সর্দি, কাশি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনদের গরম কাপড় ও পুষ্টিকর খাবার খেতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’
আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মঞ্জুর আলম জানান, ‘রোগীর চাপ সামলানোর মতো হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে। শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রায় দেড়শ শিশু ভর্তি ছিল।’
জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, ‘শীতে দরিদ্র ও আসহায় মানুষদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য কম্বল ও নগদ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যা ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।’
এছাড়া শুকনা খাবার ও দুর্যোগ মোকাবেলায় বেসরকারিভাবে অসহায় মানুষদের মাঝে কম্বল বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এআই//
আরও পড়ুন