ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

শিক্ষকের প্রেমের প্রস্তাব ও শ্লীলতাহানি, ছাত্রীর স্ট্যাটাসে তোলপাড়

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:২৩, ২১ ডিসেম্বর ২০২০ | আপডেট: ০৯:৫০, ২১ ডিসেম্বর ২০২০

সিরাজগঞ্জের অন্যতম বিদ্যাপিঠ কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের এক ছাত্রী তাকে প্রেমের প্রস্তাব ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ করে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার ঘটনায় রাজিব চক্রবর্তী (৩৬) নামে এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তের নির্দেশও দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। 

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সিরাজগঞ্জ কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইফতেখার উদ্দীন শামীম ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত ও এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রাজিব চক্রবর্তীকে সাময়িক বরখাস্ত ও সিরাজগঞ্জ সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) তদন্ত করতে বলা হয়েছে। 

এদিকে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই ছাত্রীর দেয়া স্ট্যাটাসটি নিয়ে সিরাজগঞ্জজুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। সেইসঙ্গে ওই শিক্ষক ছাত্রীটির মেসেঞ্জারে অনেক আপত্তিকর কথাও লিখেছে বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে একটি মহল সেই ছাত্রীর বাড়ী গিয়ে ফেসবুক পোস্টটি ডিলিট করিয়েছেন বলেও জানা গেছে। শিক্ষক রাজিব এর আগে এমন ঘটনা অনেক ছাত্রীর সাথেই ঘটিয়েছেন- এমন তথ্য ধীরে ধীরে বের হয়ে আসছে। 

ফেসবুকে দেয়া ওই ছাত্রীর স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো- কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজে সাস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে যাই, আমার ছেলেবেলার সেই স্মৃতিগুলোকে নতুনভাবে উপভোগ করতে। তবে আমার বিন্দুমাত্র ধারণাও ছিলো না, এমন পরিস্থিতির শিকার আমাকে হতে হবে। সেই বিকেলে আমাকে রাজিব চক্রবর্তী নামের টিচার, যার কাছে আমার ছেলেবেলায় ছিলো আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার অনুপ্রেরণা, আমাকে ডেকে আমায় প্রেমের প্রস্তাব দেয় এবং আমাকে পরে মেসেজ-এ অনুরোধ করা হয়- এই ঘটনাটি কারও কাছে প্রকাশ না করতে।

তাকে যারা আপনারা জানেন, হয়তো এটি শোনার পর বিশ্বাস না হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। হ্যা, নিজের কানে শুনে আমারও বিশ্বাস হতে কষ্ট হয়েছে। কিভাবে হতো? ছোটবেলায় তাকে যে আমি আমার বাবার মতো দেখতাম। তাই বাস্তবতার সম্মুখীন হওয়াটা ছিলো দুঃস্বপ্নের থেকেও কঠিন। তার ব্যাপারে আমি অনেক বাজে কথা শুনেছি।

তবে সব কিছুই মনে হতো রূপ কথার মতো অবাস্তব। সেদিনের পর আমার সেই মিথ্যে ঘোর কেটে বাস্তবতার সম্মুখীন হতে আমি বাধ্য হই। হয়তো সে আমাকে নিজের মেয়ের চোখে দেখেনি, সে দিনের ঘটনা প্রমাণ করে যে, সে আমাকে তার নিজের মেয়ের মতো আদর স্নেহ করেনি। সবটাই ছিলো বিকৃত মানসিকতার পরিচয়। আমার সবচেয়ে ভয় হয়, সেই পরীর মতো বাচ্চা মেয়েদের কথা। হয়তো তাদের এইসব বোঝার বুদ্ধিটাও হয়নি তখন, ঠিক যেমন ছিলাম আমি। 

কে জানে, তার প্রাইভেট পড়ানোর সময় সে তার মেয়ের বয়সের ছাত্রীর দিকে কোন নজরে তাকায়? অথবা হয়তো করা হয় হয়রানি! হয়তো গুড টাচ অথবা ব্যাড টাচ-এর কথা আমার ছোটবেলায় কখনও মাথায় আসেনি। তার মতো একটি ভালো মানুষের মুখোশ পরা সেই দুশ্চরিত্র লোকটির। তবে আমার কথাগুলো শুনে অন্য কোনও বাচ্চা বা মেয়ের যেন কোনও ক্ষতির সম্মুখীন না হতে হয়।

হয়তো অনেকের বাবা-মা সতর্ক হবেন যে, কোনও ধরনের বিকৃতি মস্তিস্কের মানুষের কাছে তাদের মেয়েকে পাঠাচ্ছে। আমার একটি উদ্দেশ্য, আমার মতো অন্য কাউকে যেন এমন পরিস্থিতির শিকার না হতে হয় এবং সবাইকে সর্তক হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক রাজিব চক্রবর্তী বলেন- কেউ আমাকে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা প্রেম ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি এমন কাজ করিনি। আমার ঐ ছাত্রীকে দিয়ে কে বা কারা ফেসবুকে এমন পোস্ট দিয়েছে। আমি সম্পূর্ণ নিদোর্ষ।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি