যাত্রীবাহী বাসে ড্রামে নারীর মরদেহ, রহস্য উদঘাটন
প্রকাশিত : ১৬:৩০, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০
হত্যা করে ড্রামে ভরে নারীর মরদেহ অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার ঘটনায় মোঃ আঃ খালেক হাওলাদার (৫৫) নামে প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। গ্রেফতারকৃত আঃ খালেক হাওলাদার বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলারার পশ্চিম বিবিরপাড় এলাকার মৃত গোলাম আলী হাওলাদারের ছেলে এবং বরিশাল নগরের কাশিপুরস্থ ভুইয়া মসজিদ সংলগ্ন নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের কেয়ারটেকার।
শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বরিশাল নগরের রুপাতলীস্থ পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির।
তিনি জানান- গত ২০ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে বরিশাল জেলার গৌরনদী থানাধীন ভূরঘাটা নামক স্থানে বাসের ভিতর একটি ড্রামে এক অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। তার বয়স আনুমানিক ৩৪/৩৫ বছর হবে।
পিবিআই ক্রাইমসিন টিম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে ক্রাইমসিন সংরক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। প্রাথমিক পর্যায়ে এটি একটি ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হয়। পুলিশের বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা মৃতার পরিচয় নির্ণয়, হত্যার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করে। পিবিআই বরিশাল জেলার একটি টিমকে ছায়া তদন্তে নিয়োজিত করা হয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান- একই দিন বরিশাল জেলা পিবিআই অজ্ঞাতনামা মৃতার পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। সে গৌরনদী উপজেলার সদরের বাসিন্দা ও কাতার প্রবাসী মোঃ সহিদুল ইসলামের স্ত্রী ছাবিনা বেগম।
এরপর ২৩ নভেম্বর মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই এর বরিশাল জেলা ইউনিট দায়িত্ব গ্রহন করে। মামলাটি তদন্তকালে পিবিআই বরিশাল জেলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ দশ সদস্যের একটি টিম আসামি গ্রেফতারের জন্য বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান পরিচালনাকালীন গত রাত ৩টার দিকে হত্যায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি মোঃ আঃ খালেক হাওলাদারকে বরিশাল মেট্রোপলিটনের বিমানবন্দর থানাধীন হিজলতলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান- হত্যার ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যেই পিবিআই হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে প্রযুক্তি ও ম্যানুয়াল পদ্ধতির সাহায্যে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামিসহ অভিযান পরিচালনাকালে তার বর্ণনা মতে হত্যার কাজে ব্যবহৃত আলামত হিসেবে পূর্বে জব্দকৃত ড্রাম ও পাইপের তৈরী রড বাঁকা করার যন্ত্র (চিরা শাবল) শনাক্ত করেন। যে শাবল দিয়ে নিহতের মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয় বলে গ্রেফতারকৃত আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
তিনি আরও জানান, আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে- পাওনা ৫/৬ লাখ টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে আসামি খালেক হাওলাদার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রবাসীর স্ত্রী ছাবিনা বেগমকে হত্যা করে। ওই টাকা দিয়ে সাবিনার স্বামীর মাধ্যমে আসামি খালেক হাওলাদারের এক স্বজনকে বিদেশে পাঠানোর কথা ছিলো। কিন্তু সে টাকা না দিয়ে বার বার ঘোরানোর কারণে খালেক হাওলাদার সাবিনার ওপর ক্ষুব্ধ হয় বলে জানায় সে।
এনএস/
আরও পড়ুন