পৌরসভা নির্বাচন: আ.লীগ ১৮, স্বতন্ত্র ৩, বিএনপি ২
প্রকাশিত : ০৯:২০, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০
পৌরসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ সোমবার শেষ হয়েছে। ২৪টি পৌরসভার ভোট গ্রহণ শেষে ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ১৮টিতে আওয়ামী লীগ, তিনটিতে স্বতন্ত্র, দুটিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ভোট শেষ হওয়ার কিছু আগে প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় খুলনার চালনা পৌরসভা নির্বাচনের মেয়র পদের ফল স্থগিত করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত ২৪টি পৌরসভায় ভোট নেওয়া হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে)। সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে টানা ভোট গ্রহণ।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তার তথ্য ও সংবাদদাতার পাঠানো খবর:
আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র বিজয়ীরা হলেন
কুড়িগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী মো. কাজিউল ইসলাম বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ২০ হাজার ৫৭১। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫ হাজার ১৬৪ ভোট। এ ছাড়া বিএনপির ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ মো. আবু বকর সিদ্দিক ৫ হাজার ২৬৪ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী আবদুল মজিদ হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৮৫ ভোট এবং ‘বিদ্রোহী হয়ে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাইদুল হাসান জগ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ হাজার ৮১২ ভোট।
বরিশালের বাকেরগঞ্জের পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. লোকমান হোসেন ডাকুয়া ৭ হাজার ৭১ ভোট পেয়ে বেসরকরিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী খলিলুর রহমান পেয়েছেন ২ হাজার ৪১২ ভোট।
উজিরপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গিয়াসউদ্দিন ব্যাপারী পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সহিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৭৬৫ ভোট।
বরগুনার বেতাগী পৌরসভা নির্বাচনে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী এবিএম গোলাম কবির (নৌকা প্রতীক)। তিনি ভোট পেয়েছেন ৬ হাজার ১০২ ভোট। তাঁর নিকটতম বিএনপির প্রার্থী হুমায়ূন কবির (ধানের শীষ) পেয়েছেন ৫১৯ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদ হাসান মহসীন পেয়েছেন ৩১৬ ভোট। এ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ২৭৭ জন।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মালিক বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ২২ হাজার ৩৩৯। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মজিবুল হক মালিক পেয়েছেন ৭ হাজার ৬৫৭ ভোট। এই পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম পেয়েছেন ৬ হাজার ৫৬ ভোট।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী জয়লাভ করেছেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৭৮। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাইদুল ইসলাম পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৬ ভোট।
মানিকগঞ্জ পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. রমজান আলী নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেছেন। তিনি ৩১ হাজার ৫৮৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হন। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আতাউর রহমান ধানের শীষ প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৩৩৬টি।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনির আক্তার খান তরু লোদী জয়লাভ করেছেন। তিনি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২৯ হাজার ৮৭ ভোট। বিএনপির প্রার্থী মাহমুদুল হাসান ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৮৬৭ ভোট। এ পৌরসভায় ভোট পড়েছে ৬৩ দশমিক ২৭ শতাংশ।
পঞ্চগড় পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাকিয়া খাতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ১২ হাজার ৫৬ ভোট পেয়ে তিনি বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র তৌহিদুল ইসলাম পেয়েছেন ৯ হাজার ৪৭৫ ভোট।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভা নির্বাচনে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বদিউল আলম। তিনি ভোট পেয়েছেন ১০ হাজার ৮২৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আবুল মনসুর পেয়েছেন ৩ হাজার ৭২ ভোট।
সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিশ্বজিৎ রায়। তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৯১০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোশাররফ মিয়া জগ প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৫৭ ভোট। বিএনপি প্রার্থী ইকবাল হোসেন চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ৯৬০ ভোট।
ধামরাই পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী গোলাম কবির ২৩ হাজার ৩১০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী সাবেক দুইবারের মেয়র দেওয়ান নাজিম উদ্দিন পেয়েছেন ১ হাজার ৫০৩ ভোট।
রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আহসানুল হক ওরফে টুটুল চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি ভোট পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৩৩। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুল হক নারিকেল গাছ প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৭৮, বিএনপির প্রার্থী ফিরোজ শাহ ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ২৯৮ এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সাদ্দাম হোসেন হাতপাখা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৩৭২টি।
কুষ্টিয়ার খোকসা পৌরসভা নির্বাচনে আবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তারিকুল ইসলাম। নৌকা প্রতীকে বর্তমান এই মেয়র পেয়েছেন ৯ হাজার ৩৮২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী রাজু আহম্মেদ ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ হাজার ৫৮৪ ভোট।
নেত্রকোনার মদন পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ৩ হাজার ১৪১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান মোদাচ্ছের হোসেন জগ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ হাজার ৮৬৯ ভোট। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এনামুল হক পেয়েছেন ১ হাজার ২২২ ভোট।
পাবনার চাটমোহর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি নৌকা প্রতীকে ৬ হাজার ৮১২ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুল মান্নান পেয়েছেন ৮৪২ ভোট। তিনি বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ হয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেন। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আসাদুজ্জামান পেয়েছেন ৮৫ ভোট।
ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌরসভায় জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন। বেসরকারি ফলাফলে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১২ হাজার ৩৯৮ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী শাহ আবদুল্লাহ আল মামুন ধানের শীষ প্রতীকে ১৯০ ভোট পেয়েছেন।
রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভায় ১৬ হাজার ১৬৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্বাস আলী। তারঁ নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত নেতা মাজেদুর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পেয়েছেন ৮৬৭ ভোট।
স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করে যারা বিজয়ী হলেন
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন নারিকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাহামুদ আলম লিটন। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ৭৫০ ভোট। অন্যদিকে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মরতুজা সরকার মানিক পেয়েছেন ৭ হাজার ৪০ ভোট। নৌকা প্রতীকে খাজা মইন উদ্দীন পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৬০টি ভোট এবং ধানের শীষ প্রতীকে শাহাদত আলী পেয়েছেন ৩ হাজার ৪২ ভোট।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ার হাওলাদার ৩ হাজার ৩৩৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী ছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবং বর্তমান মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা। তিনি পেয়েছেন ২ হাজার ৬৮৪ ভোট।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ইকরামুল হক। তিনি আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯ হাজার ১৩৩ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র কশিরুল আলম। নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি ২ হাজার ৭৯০ ভোট পেয়েছেন।
বিএনপি থেকে জয়ীরা হলেন
রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আল মামুন ৫ হাজার ৯২০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র রবিউল ইসলাম পেয়েছেন ৫ হাজার ১৬০ ভোট।
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী এম এফ আহমেদ অলি জয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ৪১ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মাসুদউজ্জামান মাসুক পেয়েছেন ৩ হাজার ১৩৯ ভোট। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. ছালেক মিয়া পেয়েছেন ২ হাজার ৫৯৯ ভোট।
এএইচ/
আরও পড়ুন