১০ মাস ধরে বন্ধ সীমান্ত হাট, বিপাকে দু’দেশের ব্যবসায়ীরা
প্রকাশিত : ১৯:৩৬, ২৬ জানুয়ারি ২০২১
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারী বর্ডারহাট (সীমান্তবর্তী হাট) দশ মাস যাবত বন্ধ রয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে এ হাট সাময়িক বন্ধ রাখা হলেও দীর্ঘ সময় পর এখনও চালু হয়নি। ফলে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে।
জানা গেছে, রাজিবপুর উপজেলা এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আমপাতি জেলার মহেন্দ্রগঞ্জ থানার সীমান্তে অবস্থিত বালিয়ামারী-কালাইরচর বর্ডার হাট। এ হাটটি প্রায় দশ মাস যাবত বন্ধ রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে করোনা ভাইরাসের প্রবেশ ঠেকাতে সতর্কতা হিসেবে বাংলাদেশ অংশের স্থানীয় বর্ডার হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এ হাটের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে আর হাটটি চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে হাটটিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সীমান্ত এবং এর আশেপাশে এলাকার দরিদ্র মানুষেরা নতুন করে যে জীবন-জীবিকা গড়ে তুলেছিলেন তা স্থবির হয়ে পড়ে। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন হাটের নির্ধারিত ক্রেতা-বিক্রেতারা। এ অবস্থায় দ্রুত হাটটি চালুর দাবি তাদের।
বাংলাদেশের বিক্রেতা মাজেদা বেগম ও তার দুই মেয়ে তাদের বাড়িতে তৈরি বালিশ, শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা ইত্যাদি হাটে বিক্রি করেন। দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে তারা এ ব্যবসা করে রোজগার করছেন। হাট বন্ধ থাকায় এখন পুঁজি হারিয়ে পথে বসার মতো অবস্থা তার। দিন কাটছে অনেক কষ্টে।
মাজেদা বেগম বলেন, আমরা জানি বাংলাদেশের অনেক স্থলবন্দর করোনাকালীণ বন্ধ ছিল। এখন তা চালু হয়েছে। কিন্তু এখনও বালিয়ামারী সীমান্ত হাট চালু হচ্ছেনা। দ্রুত হাট চালু করে দিলে আমরা উপকৃত হবো।
বর্ডারহাট কমিটির সদস্য ও রাজিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরল আলম বাদল জানান, করোনা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ সময় হাটটি বন্ধ রয়েছে। এতে দুই দেশের ক্রেতা বিক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সম্প্রতি আমরা কমিটির সভাপতিসহ মিটিং করেছি। খুব শিগগীর হয়তো খুলবে।
এ হাটে বাংলাদেশের ২৫ জন বিক্রেতা ও ৬১৪ জন ক্রেতা এবং ভারতের ৫০ জন বিক্রেতা ও ৩৫৯ জন ক্রেতা প্রতি সোম ও বুধবার এ হাটে কেনা বেচা করে।
এদিকে, হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবার বর্ডার হাটটি চালু করতে ইতোমধ্যেই ভারতের ব্যবস্থাপনা কমিটি সিদ্ধান্ত দিয়েছে। ভারতের দেয়া চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বর্ডার হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান ও কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. সুজাউদ্দৌলা জানান, আমরা গত ১৮ জানুয়ারি পুনঃরায় হাট বসা নিয়ে সভা করে রেজুলেশন করেছি। অতি শীঘ্রই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এটি প্রেরণ করব। সেখান থেকে অনুমতি পেলে পুনঃরায় এ হাটের কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারী এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আমপাতি জেলার মহেন্দ্রগঞ্জ থানার কালাইচর সীমানা ১০৭২ মেইন পিলারের ১৯ নম্বর সাব-পিলারের পাশে উভয় দেশের ৭৫ মিটার করে ৪ বিঘা জমিতে ২০১১ সালে ২৩ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে হাটটি চালু করা হয়। আর এ হাটটি প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চালু ছিল। করোনা ভাইরাস সংক্রমণে তা দুই দেশের কর্তৃপক্ষ সাময়িক বন্ধ রাখে।
এনএস/
আরও পড়ুন