ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

অভিনব কৌশলে ১১ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:২৯, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | আপডেট: ১৪:৩১, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

কাগজের ভেতরে অভিনব কায়দায় ৪৬ লাখ শলাকা ইজি ও মোর নামের বিদেশি ব্র্যান্ডের শুল্ক ফাঁকি দেয়া সিগারেটের চালান জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও এ ফোর সাইজের কাগজ পাওয়া যায় ১৪ টন। চালানটির মাধ্যমে প্রায় ১১ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হচ্ছিল। 

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চালান আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

কাস্টম হাউসের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নগরীর রিয়াজুদ্দিন বাজারের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান করিম ট্রেডিং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এফোর সাইজের এক কনটেইনার কাগজ আমদানি করে। পণ্যচালানটি খালাসের লক্ষ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সুরমা এন্টারপ্রাইজ কাস্টম হাউসে বিল অব এন্ট্রি (নম্বর সি-২২১১৮৬) দাখিল করে। 

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় এনবিআরের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রিটি লক করে। এরপর রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নিয়ম অনুযায়ী পণ্য পরীক্ষা শুরু করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর টিম।

সূত্র জানায়, কনটেইনারের সামনের দিকে রাখা সুসজ্জিত কাগজ দেখিয়ে কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট। কনটেইনারের ভেতরের পণ্য বের করার জন্য সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধিকে অনুরোধ করলে তারা গড়িমসি শুরু করে এবং একপর্যায়ে পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য অনুরোধ করে। এই সময় চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার এম ফখরুল আলম নির্দেশে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা, বন্দর ও সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পণ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয় এআইআর শাখা।

কনটেইনার থেকে সব পণ্য বের করে আনার পর দেখা যায়, ৪৮টি পলিথিনে মোড়ানো প্যালেটের প্রতিটিতে ৪৮টি কার্টন রয়েছে যার উপরের স্তরের ১২টি কার্টনে শুধুই কাগজ এবং পরবর্তী ৩৬ কার্টন খুলে উপরে এক রিম এ ফোর সাইজের কাগজ পাওয়া যায়। কাগজের নিচে আলাদা অন্য একটি কার্টনে পাওয়া যায় অভিনব কায়দায় লুকানো সিগারেট। কনটেইনারের প্রথম আটটি প্যালেটে ছিল শুধুই কাগজ এবং নবম প্যালেট থেকে পরবর্তী ৪৮টি প্যালেটে পাওয়া যায় লুকানো অবৈধ বিদেশি সিগারেট। এই চালানে মোট ৪৬ লাখ শলাকা সিগারেট পাওয়া যায়। রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার। 

সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর ও এয়ারপোর্ট হয়ে দেশের বাজারে বিপুল পরিমাণ অবৈধ বিদেশি সিগারেট দেশে ঢুকছে। এর মধ্যে কয়েকটি অবৈধ সিগারেটের চালান আটক করে কাস্টমস, র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। শুল্ক ফাঁকি দেয়া এসব সিগারেট দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয় অবৈধ কারবারিরা। এতে করে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, ‘অবৈধ সিগারেটের মতো ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য আমদানি রোধে বর্তমানে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে। যে কারণে এখন মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য এনে আমদানিকারকরা পার পাচ্ছেন না। বর্তমানে এ ধরনের চালাল বেশি ধরা পড়ছে।’ 

তবে এরকম অবৈধ পণ্য জব্দের পাশাপাশি কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে ধূমপান বিরোধী বিভিন্ন সংগঠন।
এআই/ এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি