নাসিরনগরে গৃহবধূর আত্মহত্যা, পরিবারের অভিযোগ হত্যা
প্রকাশিত : ১৮:৩১, ৪ মার্চ ২০২১
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে যৌতুকের নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধু হেনা বেগম (১৮) আত্মহত্যা করেছে। গৃহবধুর লাশ বুধবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে জরুরী বিভাগে রেখে পালিয়েছে স্বামীর বাড়ির লোকজন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ৩ বছর পূর্বে নাসিরনগর উপজেলার চালতলপাড় ইউনিয়নের কৈরলপুর গ্রামের কৃষক আহাদ মিয়ার মেয়ে হেনা বেগমের সাথে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী ফকিরদিয়া গ্রামের শাহজাহান মিয়া (২৩) সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের ৬ মাস পর থেকে যৌতুক বাবদ আসবাবপত্র ও টাকার জন্য স্ত্রী হেনা বেগমের উপর নির্যাতন শুরু করে। মেয়ের সুখের চিন্তা করে নিহত হেনা বেগমের বাবা ধার দেনা করে পর্যায়ক্রমে ঘরের আসবাবপত্র, নগদ ২০ হাজার টাকা, মোবাইল সেট যৌতুক হিসেবে দেয়।
গত কয়েক পূর্বে পুনরায় যৌতুক বাবদ আরো ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে বেধড়ক মারধর করে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয় স্বামী শাহজাহান মিয়া। এ ঘটনায় এলাকার সালিশকারকদের অবহিত করা হলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফুসলিয়ে পুনরায় হেনা বেগমকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসে। ফের শুরু হয় অকথ্য নির্যাতন। গত বুধবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে জরুরী বিভাগে একজন নারী ও দু’জন পুরুষ হেনা বেগমকে নিয়ে আসেন। তারা নিজেদের ওই গৃহবধুর স্বজন পরিচয় দিয়ে জানান, চালের পোকা মারার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
নিহত গৃহবধুর পিতা আহাদ মিয়া জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে জানতে পারেন মেয়ের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে রয়েছে। তার একটি ২ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে। মেয়েকে যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে।
জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আরিফুজ্জামান হিমেল জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আধঘণ্টা আগেই মারা যান বলে ধারণা করা হচ্ছে। মৃত্যুর সংবাদের পর তার সঙ্গে আসা স্বজনদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, লাশ ফেলে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। লাশের সুরতহাল করা হয়েছে। নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ফাঁড়ির ইনচার্জ রঞ্জন বাবু জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরকে//
আরও পড়ুন