ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

স্বর্ণের দুলের জন্যই কাশফিয়া হত্যাকাণ্ড!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:২৮, ১৯ মার্চ ২০২১

শিশু কাশফিয়া ওরফে শেফা

শিশু কাশফিয়া ওরফে শেফা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ৮ বছরের শিশু কাশফিয়া ওরফে শেফা হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হোসাইনের আদালতে তারা এ জবানবন্দি প্রদান করে। 

এর আগে হোসেন মিয়া ও রিমি আক্তার নামের ওই দুই আসামি পুলিশের কাছেও সত্যতা স্বীকারসহ হত্যাকাণ্ডের পরের কিছু ঘটনার বয়ান দেয়। 

শিশু কাশফিয়া সরাইল উপজেলা সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা গ্রামের ফার্নিচার ব্যবসায়ী আব্দুল কাদেরের মেয়ে। বুধবার (১৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় সৈয়দটুলা গ্রামের নোয়াহাটি এলাকার একটি ঝোঁপ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

স্বীকারোক্তিতে হোসেন মিয়া ও রিমি আক্তার জানান, মূলত শিশুর কানে থাকা স্বর্ণের দুল নেয়ার জন্যই পরিকল্পিতভাবে তাকে ডেকে নেয়া হয়। দুল নেয়ার সময় শিশুটি চিৎকার করলে তাকে প্রথমে গলা চেপে ও পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর দুই আসামি শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। পরে একটি ঝোঁপের মধ্যে নিয়ে লাশ ফেলে দেয়। হত্যার পর রিমি আক্তার খুব স্বাভাবিকভাবেই বাড়ি গিয়ে গোসল করে ঘুমিয়ে পড়েন।  

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে কাশফিয়া নিখোঁজ হয়। একদিন পর বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির কাছের ঝোঁপের মধ্যেই তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রিমির পিতা আবদুল কাদির বাদি হয়ে থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে বুধবার দুপুরে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

 সৈয়দটুলা গ্রামের পশ্চিম পাড়ার আব্দুল মতিনের মেয়ে রিমি আক্তার ও পূর্ব পাড়ার শাহবাজ আলীর ছেলে হোসেন মিয়া এ হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত বলেই জানায় পুলিশ। এর আগে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে রিমি আক্তার, হোসেন মিয়া, জামিল ও সুশীল দত্ত নামে ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
 
সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ কবির হোসেন জানান, মঙ্গলবার বিকেল থেকে কাশফিয়ার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার খোঁজে গ্রামে মাইকিংও করে শিশুটির পরিবার। শিশুটির সাথে রিমির ভালো সম্পর্ক থাকায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে রিমির দেয়া তথ্যমতেই শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। রিমি যেসব তথ্য দিচ্ছে সেগুলো যাচাই করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতেই হোসেন ও জামালকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে শিশু কাশফিয়ার কানের দুল কেনার অপরাধে স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুশীল দত্তকে আটক করা হয়।

স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পরিদর্শক আরও জানান, শিশু কাশফিয়ার কাছে থাকা কানের দুল ছিনিয়ে নিতেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে হোসেন মিয়ার সাথে কথা বলে রিমি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, রিমি ওই শিশুকে ঘোড়ার খেলা দেখানোর কথা বলে হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যায়। হোসেন ঘরে ঢোকার পর শিশুটির কানের দুল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কাশফিয়া চিৎকার শুরু করলে প্রথমে তাকে গলাচেপে ও পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর হোসেন ও রিমি শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়। পরে রিমি কানের দুল নিয়ে সুশীল দত্তের দোকানে চার হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। হত্যাকাণ্ডের পরও খুব স্বাভাবিক ছিলো রিমি। বাড়িতে গিয়ে গোসল করে সে ঘুমিয়ে পড়ে।

কবির হোসেন বলেন, রিমি ও হোসেন মিয়াসহ চার আসামিকেই কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামিল ও সুশীল দত্তকে রিমাণ্ডে আনা হবে।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি