সরাইলে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতের যুবক খুন
প্রকাশিত : ২০:৩৬, ১২ এপ্রিল ২০২১ | আপডেট: ২২:০৬, ১২ এপ্রিল ২০২১
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দু'পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে এক যুবক খুন হয়েছে। নিহতের নাম দেলোয়ার হোসেন। পেশায় অটোচালক।
স্থানীয়রা জানায়, গত ৭ এপ্রিল উপজেলার পাকশিমুল দক্ষিন পাড়া গ্রামের কাসেম মিয়ার জমিতে কাজ করতে যায় শাহ আলী ও সিদ্দিক গ্রুপের দু'দল শ্রমিক। পরে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। জানতে পেরে রাতেই স্থানীয় চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বিষয়টির মিমাংসা করে দেন।
অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার রাতেই শাহ আলীর লোকজন ওই গ্রামের দুর্গত গোষ্ঠীর হান্নান মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেনকে ছুরিকাঘাত হত্যা করে।
দোলোয়ারের হত্যার ঘটনায় নিহতের মা পাকশিমুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামী করে ৩৮ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
নিহত দেলোয়ারের মা জানান, আমার ছেলে একজন অটোরিক্সা চালক। এসব দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সাথে সে জড়িত ছিল না। দিনভর অটো চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
এদিকে মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার আতংকে প্রতিপক্ষের পুরুষরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন চেয়ারম্যান সাইফুলের সমর্থকদের বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে।
গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী মালেকা বেগম জানান, তার ঘরে থেকে সোনা-দানাসহ সবকিছুই লুট হয়ে গেছে। এদিকে ঘটনার পরপরই এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের স্ত্রী শামসুন্নাহার ববি জানান, গ্রামে দুটি প্রতিদ্বন্ধী গ্রুপ দ্বন্দ্বের জড়িয়ে পড়লে আমার স্বামী সেটি মীমাংসা করে দেন। খুনের ঘটনার সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। প্রতিপক্ষের লোকজন উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার স্বামীকে মামলা দিয়ে ফাঁসিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, আমার গোষ্ঠীর লোক খুন হলো, উল্টো আমাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মিথ্যা মামল দিয়ে হয়রানি করছে। আমাকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে তারা অপপ্রচারসহ হামলা, মামলা করে হয়রানি করছে। এর পেছনে সাবেক চেয়ারম্যান কাসম আলীর হাত রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তিনি
তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
সরাইল থানার এ এস আই সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা এখানে নিয়োজিত আছি। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সংঘাত এড়াতে আমরা নিয়োজিত থাকব।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এম এম নাজমুল আহমেদ জানান, খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকার অরাজকতা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ মোতায়েন আছে।
কেআই//
আরও পড়ুন