ঢাকা, শুক্রবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ঝালকাঠিতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি, মৃত্যু ১

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:৩৭, ২০ এপ্রিল ২০২১

Ekushey Television Ltd.

ঝালকাঠিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাও আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছেন নারী-শিশুসহ শত শত রোগী। এরই মধ্যে গত সাত দিনে ৭০৭ জন এবং গত ২৪ ঘণ্টায় দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। একইভাবে জেলার নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল থেকে দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। 

আজ মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সকালে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার বাঁশবুনিয়া গ্রামে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মানিক বেপারী নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

এ অবস্থায় ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর ডায়রিয়া ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শয্যা না থাকায় আক্রান্ত রোগীরা অনেকে সাধারণ ওয়ার্ড, ওয়ার্ডের মেঝে ও করিডোরসহ হাসপাতালের সিঁড়িতে ঠাঁই নিতে বাধ্য হচ্ছে। তার উপর চিকিৎসক, নার্স ও জনবল সংকটে রোগীদের সামলাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো।

এছাড়া হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত স্যালাইন না থাকায় এবং উপজেলা পর্যায়ের দোকানগুলোতে স্যালাইনের সংকট থাকায় আক্রান্ত রোগীরা শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।
 
সূত্র জানায়, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের জন্য ১৩টি বেড রয়েছে। আসন স্বল্পতার কারণে বাধ্য হয়ে রোগীরা হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল হাসান বলেন, এ মাসের শুরু থেকে ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। হঠাৎ গরম ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকার কারণে এমনটি হতে পারে।

নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মুনিবুর রহমান জুয়েল বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দিতে আমরা যথাযথ চেষ্টা করছি। ইডিসিএল থেকে স্যালাইন ও ওষুধ সরবরাহ কম থাকায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স স্বপ্নিল সমু জানান, প্রতিদিন যে হারে ডায়রিয়া রোগী আসছে তাতে ডাক্তার-নার্সসহ আয়াদের পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৩৪ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে এখানে।

কাঠালিয়ায় উপজেলার বাঁশবুনিয়া গ্রামের মানিক বেপারী সোমবার রাতে নিজ বাড়িতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে আজ ২০ এপ্রিল সকালে আমুয়া হাসপাতালে নেয়ার পর সে মারা যায়। গত ২৪ ঘন্টায় পাঁচ শতাধিক ডায়রিয়া আক্রন্ত রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা নিয়েছে। 

গত এক সপ্তাহে কাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শতাধিক রোগী ভর্তিসহ সাত শতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। মেডিকেল অফিসার ডা: ইমরান খান জানায়, প্রয়োজনীয় স্যালাইন সংকট, ডায়রিয়া সংশ্লিষ্ট সিপ্রোফ্লোক্সাসিন ও মেট্রোনিডাজল ইনজেকশনসহ অন্যান্য ওষুধ না থাকায় ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসায় সমস্যা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী বলেন, অন্য সময়ের চেয়ে এবছর ডায়রিয়া আক্রান্তের হার অনেক বেশি। করোনা ও ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দিতে ইতোমধ্যে ডাক্তার ও নার্সরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী, সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী, সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাফর আলী দেওয়ান সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ইউনিট পরিদর্শন করেন। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় স্যালাইন ও ডায়রিয়ার ওষুধ সরবরাহের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রদান করা হয়েছে।
এএইচ/এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি