৯৯৯ নম্বরে কল করে রক্ষা পেল নারী
প্রকাশিত : ১১:৪৬, ২৯ এপ্রিল ২০২১
চোরাকারবারির সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা দিনদুপুরে তালাবদ্ধ রেখে এক নারী ও তার ছেলেকে মারপিট, শ্লীলতাহানি ও লুটপাটের চেষ্টা চালায়। ৯৯৯-এ কল করলে তাদেরকে বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হলেও মূল হোতারা পালিয়েছে। ঘটনাটি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রহিমাবাদ উত্তরপাড়া গ্রামে।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে আসামি আব্দুল খালেক সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বাহিনী লাঠিসোঠা নিয়ে ওই নারীর চারতলা ভবনের নিচ তলায় প্রথমে বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। এরপর তিন তলার শয়নকক্ষে গিয়ে ওই নারীকে সন্ত্রাসীরা টানাহেচরা করে। এতে ওই নারীর ১৭ বছরের ছেলে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারপিট করা হয়।
এরপর আলমারি থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং দুই লাখ টাকা মূল্যের সোনাগহনা লুটপাট করে। পাশাপাশি বাড়িঘর ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আতাউর রহমান ফটিক এবং তরু মিয়াকে হাতে নাতে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সংবাদ পেয়ে বেলা ১২টার দিকে আবারও মামলার প্রধান আসামি আবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুল খালেক ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ওই নারী ও তার ১৭ বছরের সন্তানকে তালবদ্ধ করে রাখে।
পরে ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহযোগিতা চাইলে বিকেল ৩টার দিকে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারী ও তার ছেলেকে উদ্ধার করে।
পরে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদেরকে পুলিশি প্রহরায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় বুধবার (২৮ এপ্রিল) রাতে শাজাহানপুর থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা ওই নারী। মামলার আসামিরা হলেন- উজেলার রহিমাবাদ এলাকার অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুল খালেক (৪৮), হারুনউর রশিদ (৩৫), আব্দুল মতিন (১৭), আব্দুল মালেক (৪৫), শহরের টাউন কলোনী এলাকার আতাউর রহমান ফটিক (৫২) এবং তরু মিয়া (৪৫)।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ওই নারীকে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে হয়রানি এবং নির্যাতন করে আসছিল আসামি খালেকেসহ তার সংঘবদ্ধ বাহিনী। ঘটনার দিন প্রকাশ্যে সন্তানকে মারপিটসহ ওই নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালানো হয়। এরপর তালবদ্ধ নারীসহ তার সন্তানকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা থানায় একটি মামলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, খালেক চোরাকারবারী গ্যাংয়ের প্রধান। ট্রাক চুরি এবং কয়লা লুটের ঘটনার প্রধান আসামি সে। আদালত থেকে জামিনে এসে আবারও অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে আসামি খালেক এবং ওই নারীর বিবাহ হয়েছিল। তাদের সংসারে এক ছেলে এক মেয়ের জন্ম হয়। পরে খালেক বিভিন্ন প্রতারণার মাধ্যমে ওই নারীর সম্পদ ও অর্থ হাতিয়ে নিতে শুরু করে। এছাড়া আরেকটি বিয়ে করেন খালেক। এ ঘটনার পর ২০২০ সালে খালেককে ডিভোর্স দেন ওই নারী।
এএইচ/ এসএ/
আরও পড়ুন