ঢাকা, বুধবার   ০৯ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

করোনাকালে শার্শার মাঠে কৃষি শ্রমিকের হাট

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৬:০০, ১ মে ২০২১

Ekushey Television Ltd.

যশোরের শার্শায় করোনাভাইরাসের মধ্যেও জমজমাট চলছে কৃষি শ্রমিকের হাট। প্রতিদিন ভোরে আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বসে এই হাট। ভিড় করেন শ্রম ক্রেতা ও বিক্রেতারা। প্রতিবছর ধান কাটা, মাড়াই ও রোপণের সময় নাভারন-সাতক্ষীরা মোড়ে বসে কৃষি শ্রমিকদের এই হাট।

স্থানীয়ভাবে এই বাজারের শ্রমিকরা ‘দখিনের জোন’ নামে পরিচিত। বাজারে দরকষাকষি করে শ্রম কেনাবেচা হয়। এই বাজারের কোনো নিয়ন্ত্রক নেই। বাজারে নেই কোনো খাজনা, সমিতির ঝামেলা। নেই বাজার কমিটি। শ্রম ক্রেতা-বিক্রেতারা আপন গতিতেই চলেন এখানে। প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক শ্রমিক বেচাকেনা হয় বলে জানান স্থানীয়রা।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার টেংরাখালি গ্রামের মোস্তফা গাজি ১৪ সদস্যের একটি শ্রমিক দলের নেতা। ৪৮ বছর বয়সী মোস্তফা বলেন, ‘মহাজন তিন বেলা খাতি দিচ্ছে। আর বিঘে প্রতি ৪ হাজার ২শ’ টাকায় ধান ঘরে তুলে দিচ্ছি। গরমের জন্য কাজ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’ 

তারা কাজ করছেন শার্শার নাভারন কাজিরবেড় গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ক্ষেতে। আনোয়ার বলেন, মাখলার বিলে তিনি এবার ২৮ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছেন। এখন প্রচণ্ড গরম। যে কোনো সময় ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। তাই ধান তোলা নিয়ে বেশ ঝামেলায় আছি। তাড়াতাড়ি ধান ঘরে তোলার জন্য ১৪ জনের এই দলটি নিয়ে এসেছি।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল বলেন, চলতি মৌসুমে শার্শা উপজেলায় ২৩ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয় থাকায় অল্প সময়ের মধ্যে মাঠ থেকে ধান তোলার তাড়া রয়েছে। একই সঙ্গে সবাই ধান তোলা শুরু করায় উপজেলার সর্বত্র কৃষি শ্রমিকের অভাব দেখা দিয়েছে। বাইরের শ্রমিকরা আসায় সেই অভাব অনেকটা পূরণ হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের বিপদ থাকলেও ফসল না তুলে তো উপায় নেই। তবে এখানে দূরের শ্রমিক যারা আসছেন তারা এলাকা থেকে অনুমতি নিয়ে আসছেন। তাছাড়া প্রশাসন থেকে সব সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রচার চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলার ৬০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল।

নাভারন ফজিলাতুন নেছা মহিলা কলেজের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক জাকিয়া ইশরাত জাহান বলেন, সাতক্ষীরায় মাছের চাষ বেশি হওয়ায় সেখানে কৃষি শ্রমিকদের কাজ থাকে না। তাছাড়া এ সময় হাতে কাজ কম থাকায় অল্প সময়ে বেশি উপার্জনের আশায় এসব শ্রমিক জেলার বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতে আসেন। 
এএইচ/এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি