বৃদ্ধাশ্রমে ‘স্টোরিটেলারস অব বাংলাদেশ’ এর উপহার
প্রকাশিত : ২১:১৩, ২ মে ২০২১ | আপডেট: ২১:২৭, ২ মে ২০২১
আবদুল আলী সেবাশ্রম-এ ভালোবাসার উপহার নিয়ে হাজির হয়েছেন ‘স্টোরিটেলারস অব বাংলাদেশ’। তাদের উপহারের মধ্যে ছিল শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, গেঞ্জি, টাওয়েল, জুতো সহ নিত্য প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার, দুধ, চা, চিনি, সুগার ফ্রি সুইটেনার, প্রয়োজনীয় ঔষধ। এদিন সংগঠনের সদস্যরা এসব অসহায় মানুষদের সঙ্গে ইফতার ও রাতের খাবার সম্পন্ন করেন।
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বৃদ্ধাশ্রমে এসব উপহার সামগ্রী নিয়ে হাজির হয় ‘স্টোরিটেলারস অব বাংলাদেশ’ এর সদস্যরা।
সংগঠনটি জানায়, বৃদ্ধ বয়সে মানুষ তার দ্বিতীয় শৈশবে উপনীত হয়। এই বয়সে মানুষ চায় কারো সাহচার্য। সে দিকটি খেয়াল করেই সংগঠনের সদস্যরা এই বৃদ্ধাশ্রমে সারাদিন কাটিয়েছে। তাদের আবেগ মাখা স্মৃতিচারণ শুনে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়েছে। কেউ হয়তো তার বেদনাসিক্ত বৃদ্ধাশ্রমে আসার গল্প বলতে গিয়ে অশ্রুশিক্ত হয়েছেন। শত কষ্টেও সেই চোখের কোণের অশ্রু ধরে রাখতে পারেননি অনেকে। সন্তানের অবহেলার যন্ত্রণা যে কতটা বিষাক্ত তা তাদের চাহনিতেই স্পষ্ট হয়। আপ্লুত হয়েছে সংগঠনের সদস্যরাও।
আরও জানানো হয়, স্বেচ্ছাসেবীদের দলটি পরিপূর্ণ ছিল বিচিত্র মানুষে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, গৃহিণী, ব্যাবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ একসঙ্গে এ দিন ইফতার করে ও এসব মানুষের সঙ্গে সময় কাটায়। সুখ দুঃখের অংশীদার হয়। কেউ কেউ তাদের আদরের সন্তানদের সাথে নিয়ে এসেছিলেন। যাতে করে সন্তানেরা বৃদ্ধাশ্রমের করুণ বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারে। আমাদের এই ইভেন্টে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সকলে সহযোগিতা করেছেন। অনেক স্বেচ্ছাসেবী তার কষ্টার্জিত টিউশনের উপার্জিত টাকায় উপহার দিয়েছেন। কেউ বা তাঁর জমানো হাত খরচের টাকা দিয়ে পাশে ছিলেন। এখানে স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে ধর্ম বর্ণ, বয়স, শ্রেণিপেশা নির্বিশেষে যেন এক গভীর মেলবন্ধন তৈরী হয়েছিলো। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের মধ্যে যদি মানবিকতার চর্চা আরও দৃঢ় হয়, তাহলে হয়তো এই বৃদ্ধদের মুখে হাসি ফুটবে। সবাই একটা সময়ে পরিবারের কাছে ফিরে যাবে। কিন্তু এ সময়ে সারাটাদিন একসঙ্গে যাপন করেন সংগঠনের একঝাঁক মানবহিতৈষী স্বেচ্ছাসেবীরা। সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব অবহেলিত বয়োবৃদ্ধদের জন্য ঈদের উপহার সামগ্রী, বিভিন্ন খাবার ও জরুরী ঔষধ উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়।
স্টোরিটেলারস অব বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা ড. মোঃ মাহাদী হাসান উক্ত মানবহিতৈষী কাজে অংশগ্রহণ এর জন্য সংগঠনের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। আগামীতে আরো এমন ভালো কাজের মাধ্যমে একটি মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মানে সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করেন। সংগঠনের সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবী মেহেরিন, শরীফা, তাসনিম, নাশারাহ অংকুর, মিজু, মারুফ ও সাকিব মনে করেন এভাবে বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে পরিবার পরিত্যাক্ত মানুষদের একটু মানসিক প্রশান্তি দেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সবার উচিত এমন অবহেলিত মানুষের পাশে এগিয়ে আসা।
এসি
আরও পড়ুন