ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ভরণপোষণ চাওয়ায় আশি-ঊর্ধ্ব বাবার দু’হাত ভেঙ্গে দিল ছেলে

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৫৮, ১০ মে ২০২১ | আপডেট: ০৯:৫৪, ১০ মে ২০২১

আহত বৃদ্ধ সেকান্দার আলী

আহত বৃদ্ধ সেকান্দার আলী

Ekushey Television Ltd.

পটুয়াখালীর বাউফলে ভরণপোষণ চাওয়ায় পিটিয়ে আশি-ঊর্ধ্ব বৃদ্ধ বাবার দুই হাত ভেঙ্গে দিয়েছে এক পাষণ্ড ছেলে। উপজেলার ইন্দ্রোকুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সেকান্দার আলী নামে ওই বৃদ্ধকে রোববার (৯ মে) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আহত সেকান্দার আলী জানান, চার-চারটি ছেলে সন্তান থাকলেও স্ত্রী ময়না বেগমকে নিয়ে এই বয়সে নিজ বসতঘরে যেন পরবাসী জীবন তার। বড় ছেলে সিদ্দিকুর রহমান সিকদার থাকেন ঢাকায়। গ্রামের বাড়িতেই থাকেন মেঝ ছেলে মিজান ও সেজ ছেলে সবুজ। সবার ছোট ছেলে নিজ শ্বশুর বাড়ির কাছে পৃথক বাড়ি করে থাকেন বৌ-বাচ্চা নিয়ে। বয়সের ভারে অনেকটাই নুহ্য আর কাজকাম করতে না পারায় স্ত্রীসহ দু’জনার দু’বেলা খাবার জোটানোই দায় হয়েছে সেকান্দার আলীর। 

এ কারণে ক্ষুধার যন্ত্রনায় স্ত্রী ময়না বেগম চলে যান মেয়ে তাজমহলের কাছে। থাকেন তিনি মাঝেমধ্যে তার বাবার বাড়িতেও। আর এলাকায় ও প্রতিবেশিদের কাছে হাত পেতে চলেন বৃদ্ধ সেকান্দার আলী। একান্ত নিরুপায় হলে ধর্না দেন বড় ছেলের মেয়ে (নাতনি) মরিয়মের কাছে। তবে বেশিরভাগ রাত-বিরাতে মসজিদ কিংবা কোনও দোকানের বেঞ্চিতেই আশ্রয় নেন তিনি। 

সেজ ছেলে সবুজ ঝাড়ের বাঁশ কেটে উজাড় করছিল- এমন খবর পেয়ে শনিবার দুপুরের দিকে বাড়িতে ছুটে যান সেকান্দার আলী। বাড়িতে গিয়ে বাঁশ কাটা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয় ছেলের সঙ্গে। একপর্যায়ে তার সম্পদ ভোগ করতে হলে স্ত্রী ময়নাসহ তাকে ভরণপোষণ দিতে হবে বলে সাফ জানায় সেকান্দার আলী। আর এতেই বাধে বিপত্তি। হাতে থাকা দায়ের উল্টো পিঠ দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয় সেকান্দার আলীকে। ভেঙ্গে দেয়া হয় তার বাম হাত ও ডান হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুল। ঘটনার পর তাকে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতেও বাধা দিয়ে আটকে রাখে সেজ ছেলে সবুজ। পরে খবর পেয়ে তার বড় ছেলে সিদ্দিকুর রহমান সিকদারের মেয়ে (নাতনী) মরিয়ম বেগম গিয়ে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ডা. আখতার-উজ-জামানের মাধ্যমে চিকিৎসা দেন।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে ডা. আখতারউজ্জামান জানান, এক্স-রেতে ওই বৃদ্ধের বাম হাতের মধ্য অংশ ও ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে।

মরিয়ম বেগম জানান, দুই চাচা বাড়িতে থাকেন, দাদার সম্পত্তিও ভোগ করেন। অথচ দাদা-দাদীকে ভরণপোষণ দেন না। ভরণপোষণ চাইলে মারধর করা হয়। এর আগেও মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নিরুপায় হয়ে হাত পেতে জীবন চালান তিনি।

বাউফল থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) আল মামুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বৃদ্ধার অভিযোগে অপরাধীকে গ্রেফতারের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’

এনএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি