ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

ঠাকুরগাঁওয়ে ৫ টাকায় ঈদ বাজার!

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:১৩, ১৩ মে ২০২১

ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচ টাকায় ঈদের বাজার করতে পেরে খুশি নিলুফা বেগম নামে হতদরিদ্র পরিবারের এক গৃহবধূ। তার ছয় সদস্যের পরিবারে এই পাঁচ টাকার বাজারই ঈদের দিনটির জন্যে যথেষ্ট। এভাবে নিলুফার মতো পাঁচ টাকায় ঈদের বাজার করেছেন জেলার প্রায় এক হাজার পরিবার।

বুধবার (১২ মে) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠে স্থানীয় “জুলুমবস্তি সহায়” নামের একটি মানবিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই পাঁচ টাকায় ঈদ বাজারের আয়োজন করে। ঈদ বাজার বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সমাজ সেবকগণ উপস্থিত ছিলেন।

এই বাজারে অসহায়দের জন্যে পাঁচ টাকায় দেওয়া হয়েছে- সেমাই, দুধ, চিনি, তেল, বিস্কুট, চাল, সবজি ও একটি করে মুরগী।

নিলুফা বেগম জানান, তার পরিবারে ছয় জন সদস্য। স্বামী ও সন্তান দিনমজুরের কাজ করে। এভাবেই চলছিলো তাদের সংসার। তবে এই করোনা মহামারীতে তারা স্বামী-সন্তান কাজ পাচ্ছে না। এমন অবস্থায় দুবেলা খাবার জোটেনা। সেখানে ঈদের জন্যে আলাদা করে সেমাই-চিনি বাজার করা সম্ভব ছিলো না। তবে জুলুমবস্তির এই পাঁচ টাকার বাজারের জন্য এবার ঈদে ভালো খাবার খেতে পারবো।

জুলুমবস্তির বাজার থেকে সহায়তা নেওয়া মনসুর বলেন, আমি আজ অনেক খুশি। কারণ ঈদের বাজার করতে পেরেছি। লকডাউনের কারণে কাজ নেই। বাসায় বসে আছি। ভবেছিলাম এবার ঈদে সন্তানদের একটু সেমাই খাওয়াতে পারবো না। তবে এদের সহযোগীতায় শুধু সেমাই না, পোলাও মাংস খাওয়াতে পারবো।

সংগঠনটির সভাপতি সুজন খান জানান, ঈদের দিন কর্মহীন মানুষরা যেন পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে আনন্দে দিন কাটাতে পারে, সেই লক্ষ্যে মাত্র পাঁচ টাকায় ঈদ সামগ্রী প্রদান করেছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদ সামগ্রী তুলে দিয়েছি আমরা। ঈদ সামগ্রী হিসেবে প্রত্যেককে চাল, সেমাই, তেল, দুধ, চিনি ও সবজি প্রদান করা হয়েছে। আর ঈদ উপহার পেয়ে খুশি সাধারণ মানুষ।

এই পাঁচ টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাগর বলেন, আমরা চেয়েছি অসহায় মানুষেরা যেন ক্রয় করে নেওয়ার অনুভূতি পায়। তারা যেন বিষয়টি দান হিসেবে না নেয়, সেটাই আমরা চেয়েছি। তাই এই নাম মাত্র পাঁচ টাকা দাম ধরেছি। তবে বাজার দেওয়ার সময় অধিকাংশের কাছ থেকে ওই টাকাও নেওয়া হয়নি। তাতে তারাও খুশি হয়েছে। আমরা এজন্য সমাজের দানশীল বিত্তবানদের ধন্যবাদ দেই। কারণ আমরা সংগঠনের পক্ষে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করেছি আর আর্থিক সহায়তা করেছেন তাঁরা। 

উল্লেখ্য, করোনার শুরু থেকেই অসহায় হতদরিদ্র মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে এই সংগঠনটি। এছাড়া সংগঠনটি দেশে করোনা শনাক্তের পর থেকে বন্ধুদের সহায়তা নিয়ে জেলা শহরের সমবায় মার্কেট চত্বরে বাজার মূল্যের চেয়ে শতকরা ৩০ ভাগ কমে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার খুলে অসহায় দরিদ্রদের মাঝে বিক্রি করে। এতে ধীরে ধীরে দানশীল বৃত্তবানরা তাদের পাশে এগিয়ে আসে। ফলে ৩০ ভাগ কম দামে নিয়মিত বাজার পরিচালনা করে সংগঠনের সদস্যরা। 

তাদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন তাদের পাশে থেকে সংগঠনের সদস্যদের দিয়ে সদরের বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়েও ৩০ ভাগ কমে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার পরিচালনা করান।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি