একযোগে বদলি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৩ এসআই
প্রকাশিত : ১৮:৩৬, ২৬ মে ২০২১
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশে কর্মরত ১৩ উপ-পরিদর্শককে (এসআই) একযোগে বদলি করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কার্যালয় এক আদেশে তাদেরকে বদলি করেন। মঙ্গলবার বিকেলে বদলির আদেশটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পৌছে।
আদেশে ১০ জন এসআইকে জনস্বার্থে ও বাকি তিনজন এসআইকে প্রশাসনিক কারণে বদলি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
বদলির আদেশ হওয়া ১৩ জন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) মধ্যে ছয়জনকে রাঙ্গামাটি, দুইজনকে বান্দরবন, দুইজনকে খাগড়াছড়ি, একজনকে লক্ষীপুর, একজনকে চাঁদপুর ও একজনকে নোয়াখালী জেলায় বদলি করা হয়েছে।
তাঁদের সবাইকে আগামী ২৯ মে এর মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের জন্য ছাড়পত্র নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় ৩০ মে থেকে তাঁরা স্ট্যান্ড রিলিজ বা তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হবেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।
এনিয়ে হেফাজতি তান্ডবের ঘটনার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারি পুলিশ সুপার, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিশ্বরোড খাঁটিহাতা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত), সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন), সদর মডেল থানার পরিদর্শকসহ (মিডিয়া) পুলিশের ২০ জন অফিসারকে বদলি করা হয়েছে।
বদলির আদেশ হওয়া ১৩জন উপ-পরিদর্শকের মধ্যে বিউটি রানী দাস, বজলুর রহমান খাঁন, মোহুমায়ূন কবির, মোআমির হামজা ও এস. এম. আতিকুজ্জামান এবং মোতোফাজ্জল হোসেনকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলায়, তপু সাহা ও মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীনকে বান্দরবন পার্বত্য জেলায়, মোমতিউর রহমান ও মোশাহ সাব খাঁনকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় বদলি করা হয়েছে।
এছাড়াও এসআই মোশফিকুল ইসলামকে লক্ষ্মীপুর, মোমিজানুর রহমানকে চাঁদপুর এবং মোনূরুল আমিনকে নোয়াখালী জেলায় বদলি করা হয়েছে।
এদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান ও নূরুল আমিনের বদলির ধরন প্রশাসনিক কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর বাকিদের বদলি জনস্বার্থে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) রইছ উদ্দিন বলেন, নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবেই তাদেরকে বদলি করা হয়েছে। অনেকেরই জেলায় দুই বছর পূর্ণ হয়েছে। তবে তাঁদের মধ্যে ১০ জন এসআইকে জনস্বার্থে বদলি করা হয়েছে। তিনজনকে প্রশাসনিক কারণে বদলি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতা চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।
হামলাকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, পৌরসভা কার্যালয়, সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, এসিল্যান্ডের কার্যালয়, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়সহ সরকারি, বেসরকারি প্রায় অর্ধ-শতাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরিতে পরিণত করে।
এসব ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন থানায় এ পর্যন্ত ৫৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৪৯৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কেআই//
আরও পড়ুন