ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

কান্না করায় শিশুকে ৭ তলা থেকে ফেলে দিতে চাইলেন নার্স!

শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৭:২১, ২৯ মে ২০২১

মায়ের কোলে শিশু লাবেল হাসান

মায়ের কোলে শিশু লাবেল হাসান

কান্না করায় চার মাসের শিশু লাবেল হাসানকে হাসপাতালের ৭ম তলা থেকে প্রকাশ্যে ছুঁড়ে ফেলার হুমকি দিয়েছেন দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স আছমা বেগম। শুক্রবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী ওই শিশু শহরের মোবারকপুর মহল্লার মোহর উদ্দিনের ছেলে। গত বুধবার (২৬ মে) রাতে হাসপাতালের ৭ম তলার শিশু ওয়ার্ডে লাবেল ভর্তি হয়।

শিশুটির মা চম্পা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী মোহর উদ্দিন ঠাণ্ডাজনিত রোগের কারণে গত বুধবার রাতে লাবেলকে সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। এরপর থেকে সেখানে তার চিকিৎসা চললেও শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎ করে লাবেল হাসান বেশি কান্না শুরু করে। তখন আমি নার্স আছমা বেগমের কাছে গেলে তিনি আমাকে একটা ঔষধ (উইন্ডল প্লাস) বাইরে থেকে কিনতে পাঠান। 

পরে বাইরে থেকে শিশুর ঔষধ কিনে আছমা বেগমকে দিলে সেটা নিয়ে হাতে সময় নেই বলে ১ ঘণ্টা কালক্ষেপণ করেন। এদিকে শিশুটির কান্না বাড়তে থাকে। ছেলের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে, চম্পা বেগম পর পর কয়েকবার ওই নার্সকে ডাকার পর সে রাগান্বিত হয়ে এক পর্যায়ে শিশুকে ঔষধ না দিয়ে ৭তলা থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিবে বলে হুমকি দেয়। শুধু তাই নয়, পুলিশ দিয়ে থানায় ধরে নেওয়ারও হুমকি দেয় নার্স আছমা বেগম। এতে ক্ষিপ্ত হন শিশুর বাবা ও ওয়ার্ডের অন্যান্য শিশুর অভিভাবকরা। 

এদিকে শিশুকে হাসপাতাল থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকির ঘটনা শোনার পর কেউ কেউ নার্সদের গালিগালাজ শুরু করলে ওই নার্স ডিউটি থাককালীন সময়ে সুকৌশলে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যান। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান। 

পাশের বেডে থাকা শিশু রাজু মিয়ার অভিভাবক বলেন, এটা একটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এমন কাজ করা ওই নার্সের মোটেও ঠিক হয়নি। 

ঘটনার পর সিনিয়র নার্স আছমা বেগমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ডিউটিতে থাকা আরেক সিনিয়র স্টাফ নার্স রুবিয়া বেগম বলেন, 'যখন এমন ঘটনা ঘটেছে তখন আমি ছিলাম না। পরে এসে শুনতে পেলাম এমন একটা ঘটনা ঘটেছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে শিশুটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ায় শিশুটির কান্না বন্ধ হয়। 

সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. খাইরুল কবির সুমন-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'বিষয়টির ব্যাপারে আমিও অবগত আছি। সরেজমিনে তদন্তে প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' 

এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনোয়ারুর রউফ বলেন, 'হাসপাতালের নার্স যদি এমন ঘটনা করে থাকে, তাহলে শনিবার তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি